SAIL

বোনাস না হওয়ায় ক্ষোভ সেল, ইসিএলে

ডিএসপি সূত্রে জানা গিয়েছে, সাধারণত দুর্গাপুজোর আগে সেলের তরফে স্টিল প্ল্যান্টের কর্মীদের এককালীন অনুদান দেওয়া হয়। বিভিন্ন কারখানায় অনুদানের হেরফের হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর ও আসানসোল শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:২৬
Share:

ডিএসপি-র গেটের সামনে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র

শিল্পাঞ্চলে পুজোর বাজার জমে শ্রমিকেরা পুজোর ‘অনুদান’ (বোনাস) পেলে। আর জেলার দু’টি বড়টি রাষ্ট্রায়ত্ত শ্রম-ক্ষেত্র হল সেল ও ইসিএল। এই দু’টি সংস্থায় শুধুমাত্র আসানসোল মহকুমাতেই অন্তত ৬৯ হাজার শ্রমিক কর্মরত। কিন্তু সোমবার পর্যন্ত এই দু’জায়গাতেই বোনাস হয়নি। দুর্গাপুজোর আগে আদৌ বোনাস মিলবে কি না, তা নিয়ে সেল-এর শ্রমিকদের মধ্যে তৈরি হয়েছে সংশয়।

Advertisement

সেল-এর পশ্চিম বর্ধমানে চারটি কারখানা, দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্ট (ডিএসপি), অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট (এএসপি), বার্নপুরের ইস্কো ও কুলটির সেল গ্রোথ ওয়ার্কস। ডিএসপি সূত্রে জানা গিয়েছে, সাধারণত দুর্গাপুজোর আগে সেলের তরফে স্টিল প্ল্যান্টের কর্মীদের এককালীন অনুদান দেওয়া হয়। বিভিন্ন কারখানায় অনুদানের হেরফের হয়।

সেল সূত্রে জানা গিয়েছে, সর্বশেষ বৈঠকে শ্রমিক সংগঠনগুলির সঙ্গে কর্তৃপক্ষের বোনাস নিয়ে ঐকমত্য হয়নি। এ বিষয়ে, সেল কর্তৃপক্ষ পরবর্তী বৈঠক ডেকেছেন ১০ অক্টোবর, অর্থাৎ দুর্গাপুজোর পরে। শ্রমিক সংগঠনগুলির দাবি, প্রথমে ৬০ হাজার টাকা বোনাসের দাবি জানানো হয়। শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা ৪৫ হাজার টাকা বোনাসের বিষয়ে সম্মত হন। তবে কর্তৃপক্ষ সর্বশেষ ২৬ হাজার টাকার বেশি বেনাস দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানান বলে দাবি। আইএনটিইউসি-র কেন্দ্রীয় সম্পাদক হরজিৎ সিংহ, সিটুর জেলা সম্পাদক বংশগোপাল চৌধুরীরা জানাচ্ছেন, সামগ্রিক ভাবে সেল গত বছর লাভের মুখ দেখেছে। ফলে, শ্রমিকদের ৪৫ হাজার টাকা বোনাসের দাবি ন্যায়-সঙ্গত। কিন্তু এ বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি সর্বশেষ বৈঠকে।

Advertisement

এ দিকে, সোমবার থেকে শুরু করেছে শ্রমিক আন্দোলনও। সোমবার সন্ধ্যায় ডিএসপি কর্তৃপক্ষ শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা পুজোর আগেই বোনাস দেওয়ার দাবি জানান। সেল-এর সঙ্গে বৈঠক করে দু’দিনের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন প্রতিনিধিরা। পাশাপাশি, দুর্গাপুরে আন্দোলনের রূপরেখা ঠিক করতে এ দিনই বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন নিজেদের মধ্যে বৈঠকে বসে। সে সঙ্গে, বিএমএস নেতা বিজয় কুমার, এআইটিইউসি নেতা শম্ভুচরণ প্রামাণিকদের দাবি, “বোনাস নিয়ে একটি নির্দিষ্ট নীতি প্রণয়ন করতে হবে। তা না থাকায় সমস্যা হচ্ছে।”

পাশাপাশি, ইসিএল-এ বোনাস সংক্রান্ত বিষয়ে ২৯ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা বলে জানা গিয়েছে। এ ক্ষেত্রেও পূর্ববর্তী বৈঠকে ঐকমত্য হয়নি। শ্রমিক নেতৃত্বের একাংশের মতে, পরবর্তী বৈঠকেও ঐকমত্য না হলে, ইসিএল-এ পুজোর আগে বোনাস মিলবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে বাজারও তেমন জমেনি বলে জানাচ্ছেন আসানসোলের বস্ত্র ব্যবসায়ী বিশ্বম্ভর রুদ্র, বার্নপুরের ব্যবসায়ী ভক্ত দত্ত, ‘দুর্গাপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সম্পাদক ভোলা ভকতেরা।

শুধু রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রেই নয়, বোনাস নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছে বেসরকারি ক্ষেত্রেও। পুজো-বোনাস, বকেয়া মাইনে-সহ অন্য দাবিতে সোমবার দুর্গাপুরে বিক্ষোভ দেখান একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এটিএম-এর বেসরকারি রক্ষীরা। সিটি সেন্টারের বেঙ্গল অম্বুজায় বেসরকারি ঠিকা সংস্থার কার্যালয়ে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। ঠিকা সংস্থার কেউ না আসায় যোগাযোগ করা যায়নি। পাশাপাশি, বোনাসের দাবিতে কাঁকসার বাঁশকোপা টোলপ্লাজ়ার কর্মীরাও বিক্ষোভ দেখান। ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের প্রজেক্ট ম্যানেজার রাকেশ ঠাকুর জানান, কর্মীদের প্রতি মাসে বোনাস দেওয়া হয়। তা ‘পে-স্লিপে’ লেখা আছে। বিষয়টি কর্মীদের কাছে স্পষ্ট করার দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement