চলছে বৈঠক। নিজস্ব চিত্র
গত বছর কাটোয়া মহকুমার তিন থানায় সাতটি পকসো (প্রোটেকশন অফ চিল্ড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস) মামলা দায়ের হয়েছিল। তারপরেও এক জন শিশুকেও শিশু কল্যাণ কমিটির দফতরে পাঠানো হয়নি কেন? — পুলিশ আধিকারিকদের কাছ থেকে এ ভাবেই জবাব চাইলেন জেলা শিশু কল্যাণ আধিকারিক।
সঙ্গে গ্রাম স্তরে শিশু কল্যাণ কমিটি গড়া হয়নি কেন, বিডিওদের সে প্রশ্নও করেন তাঁরা। যদিও কোনওটারই সদুত্তর মেলেনি।
সোমবার মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে ওই বৈঠকে শিশু দত্তক নেওয়ার পদ্ধতি থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় সরকারের সুসংহত শিশু সুরক্ষা প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হয়। মহকুমাশাসক খুরশিদ আলি কাদরি ছাড়াও জেলা শিশু কল্যাণ আধিকারিক সুদেষ্ণা মুখোপাধ্যায়, সিডব্লুসির চেয়ারপার্সন দেবাশিস নাগ ছিলেন। ছিলেন পাঁচ বিডিও, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, চাইল্ড লাইন, অঙ্গনওয়াড়ি, স্বাস্থ্য, পুলিশ ও শ্রম দফতরের আধিকারিকেরা।
প্রথমেই ২০০৯ সালে চালু হওয়া সুসংহত শিশু সুরক্ষা প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হয়। পুরসভা বা পঞ্চায়েত এলাকায় শিশুশ্রমিক কতজন, তাদের রক্ষা করার দায়িত্ব বোঝানো হয় অঙ্গনওয়াড়ি ও পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিদের। জীবনধারন, নিরাপত্তা, সামগ্রিক বিকাশে শিশুদের অংশ গ্রহণের অধিকার নিয়েও আলোচনা হয়। রাস্তায় পড়ে থাকা কোন শিশুকে মানুষ করা যে আইনত অবৈধ সে বিষয়টিও গ্রামের বাসিন্দাদের বোঝানোর নির্দেশ দেওয়া হয় বিডিও ও পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিদের। কোনও শিশু উদ্ধার হলে তাকে প্রথমে থানায় নিয়ে আসা, পরে সিডব্লুসিকে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। সিডব্লুসি নির্ধারন করবে সেই শিশু কোন হোমে যাবে এবং তাকে দত্তক নেওয়া যাবে কিনা।
এরপরেই গত বছরে কেতুগ্রাম থানায় একটি, কাটোয়া থানায় পাঁচটি ও মঙ্গলকোট থানায় দায়ের হওয়া একটি পকসো মামলায় শিশুদের তাঁর দফতরে না পাঠানো কড়া প্রশ্ন করেন সুদেষ্ণাদেবী। শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পুরসভা এলাকায় ওয়ার্ডভিত্তিক ও গ্রামে ব্লকভিত্তিক শিশু সুরক্ষা কমিটি গড়ার কথাও মনে করানো হয়। ওই কমিটিতে স্থানীয় শিক্ষক, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, পঞ্চায়েত প্রধানেরা যেমন থাকবেন তেমনই নিজেদের কথা বলার জন্য ১৮ বছরের নীচে দু’জন শিশুও থাকবে। কাটোয়া ১ ব্লকে ৩৯টি গ্রামে শিশু সুরক্ষা কমিটি না হওয়ার কারণ জানতে চাওয়া হয় বিডিওর কাছে। কেতুগ্রাম ১ ব্লকেও এই কমিটি একটিও গঠিত হয়নি। কেতুগ্রাম ২ ব্লকে এখনও ১৭টি ও মঙ্গলকোটে ২৬টি কমিটি তৈরি বাকি। তবে ১০১টি কমিটি গড়ে প্রশংসা পান কাটোয়া ২ ব্লকের বিডিও শিবাশিষ সরকার। বিডিওদের শীঘ্রই কমিটি তৈরি করে রিপোর্ট পাঠানোর নির্দেশ দেন মহকুমাশাসক।