সভায় শুভেন্দু। নিজস্ব চিত্র
দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তৃণমূলকে আক্রমণ তো করলেনই, জামালপুরে দামোদর সেতুর পাশে সভা থেকে সিপিএমকেও বিঁধলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী। মঙ্গলবার দলীয় কর্মীদের তৃণমূলের বিরুদ্ধে নির্ভয়ে লড়াই করার বার্তা দেন তিনি। সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, গ্রামবাংলায় তৃণমূলের বিরোধী হিসেবে সিপিএম উঠে আসতেই বিজেপি তাদের আক্রমণ শুরু করেছে।
জামালপুরে গত কয়েক দিন ধরে তৃণমূলের ‘দখলে’ থাকা দেওয়াল মুছে নিজেদের প্রতীক ও পঞ্চায়েত নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার আবেদন জানাচ্ছে সিপিএম। চারটে বুথে অন্তত ৫০টির মতো দেওয়ালে ঘাসফুল ‘চাপা’ পড়েছে কাস্তে, হাতুড়ি, তারায়। রাজনৈতিক মহলের দাবি, তৃণমূলের দেওয়াল কেড়ে নেওয়ার পরেও শাসক দলের নেতারা চুপ মানে ওই সব বুথে সিপিএম জাগছে। ২০১৯ ও ২০২১ সালের ভোটে বামেদের থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকা তৃণমূল-বিরোধী ভোট ফিরছে, অনুমান তাঁদের। তার মানে, সরছে বিজেপির ভোটও।
এ দিন শুভেন্দু বলেন, ‘‘তৃণমূল ও সিপিএম বাতিল দল হয়ে গিয়েছে। সিপিএম চিরকূটে চাকরি দিয়ে বেতনের ২.৫ শতাংশ লেভি আদায় করত। আর তৃণমূল নিজের পরিজনেদের চাকরি দিয়েছে। দোকান খুলে চাকরি বিক্রি করছে। দুটো দলই সমান।’’ তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিজেপি লড়ছে বলেই সিপিএম রাস্তায় বার হতে পারছে বলে দাবি করেছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘২০১৬ সালে বাম প্রার্থী জামালপুর থেকে জিতেছিলেন। তারপর সিপিএম ঘরে ঢুকে গিয়েছিল। আপনারা সিপিএমের ফাঁদে পা দেবেন না। কারা প্রকৃত তৃণমূলের বিরোধী দল হিসেবে কাজ করছে, সেটা তুলনা করে দেখবেন।’’
আগামী এক বছরের মধ্যে পঞ্চায়েত আর লোকসভা নির্বাচন। শুভেন্দুর দাবি, ‘‘২০১৮ সালের মতো নয়, মানুষের পঞ্চায়েত গড়ে তোলার জন্য আন্দোলন করছি।’’ ‘হার্মাদরা’ আর চমকায় কি না, সেটাও কর্মীদের কাছে জানতে চান তিনি। ‘হ্যাঁ’ শুনে বলেন, ‘‘যে হামলা করবে, তার অবস্থা কেষ্টর মতো হবে।’’
জামালপুর, রায়নায় দামোদরের বালি ‘লুট’ নিয়েও সরব হন তিনি। জামালপুরের এক তৃণমূল নেতার নাম করে বলেন, ‘‘শান্ত ভাবে থাকুন। মাঝে তো বিক্ষুব্ধ হয়ে গিয়েছিলেন।’’ রায়না ১ ব্লকের এক তৃণমূল নেতার উদ্দেশেও বলেন, ‘‘মাদক মামলায় কত দিন জেল খেটেছিলেন মনে আছে!’’
তৃণমূলের মুখপাত্র, বিধায়ক (কালনা) দেবপ্রসাদ বাগ যদিও বলেন, ‘‘এ সব কথার কোনও মূল্য নেই। আমরাও ওই জায়গায় সভা করে জবাব দেব।’’ জেলা সিপিএমের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সমর ঘোষের দাবি, ‘‘সিপিএমের সভা, মিছিলে মানুষ জোট বাঁধছে। তাতেই তৃণমূল-বিজেপি ভয় পাচ্ছে।’’