প্রতীকী ছবি।
নিয়ম মেনে দোকান খোলা হয়েছিল পানাগড় বাজারে। কিন্তু আচমকা ৩০-৪০ জন এলাকাবাসী বাজারে এসে, দোকান বন্ধের আর্জি জানান। পুলিশ জানায়, করোনা-সতর্কতায় কোনও রকম স্বাস্থ্যবিধি না মানায় ওই দলটির দশ জনকে আটক করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে পানাগড় বাজারের ঘটনা।
‘পানাগড় চেম্বার অব কমার্স’-এর সভাপতি মহম্মদ মকিম খান বলেন, ‘‘আমরা সরকারি নির্দেশ মেনেই দোকান খুলছি। এ দিন কিছু অপরিচিত যুবক অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করেছিল। পুলিশ উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহন করুক।’’
অশান্তি পাকানোর চেষ্টার অভিযোগ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন দাবি করেন, আশপাশের নানা এলাকায় করোনা-সংক্রমণের ঘটনা ঘটছে। বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা বাজারে আসছেন। ফলে, সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ছে। যদিও স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, ওই এলাকায় করোনা-সংক্রমণের কোনও খবর তাদের কাছে নেই।
এই চাপান-উতোরের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে কাঁকসা থানার পুলিশ। দশ জনকে স্বাস্থ্যবিধি ও ‘লকডাউন’ অমান্য করার অভিযোগে আটক করে পুলিশ।
এ দিকে, ‘লকডাউন’-এ ছাড় মেলার সঙ্গে সঙ্গে অকারণে বাজার যাওয়া, পথে বেরনোর প্রবণতাও বেড়েছে জনতার, এমনই অভিজ্ঞতা দুর্গাপুর মহকুমার নানা প্রান্তে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের। ‘লকডাউন’-এর প্রথম পর্বে আর্জি জানিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করার পথ নিয়েছিল পুলিশ-প্রশাসন। তাতে বিশেষ লাভ না হওয়ায় শুরু হয় ধরপাকড়। এর পরে বাজারে ভিড় কমে। বুধবার থেকে প্রায় সব ধরনের দোকান খোলার অনুমতি মেলায় আচমকা পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে বলে মনে করছে পুলিশেরই একাংশ। দুর্গাপুরের বিভিন্ন বাজারের ব্যবসায়ীরা বাজারের ভিড় নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিভিন্ন ধরনের দোকান বিভিন্ন সময়ে খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সেই অনুযায়ী তালিকা তৈরি করে তাঁরা প্রশাসনের কাছে জমা দিয়েছেন। কিন্তু ক্রেতাদের একাংশ অকারণে বাজারে ভিড় করছেন বলে অভিযোগ।
পুলিশ জানায়, করোনা-সতর্কতায় বাজারের ক্রেতা ও বিক্রেতাদের উপরে নজর রাখা হচ্ছে। নির্দিষ্ট সময়ের বেশি সময় দোকান খোলা রাখলে সংশ্লিষ্ট বিক্রেতার বিরুদ্ধে, ‘মাস্ক’ পরে না এলে, সামাজিক দূরত্ববিধি না মানলে সংশ্লিষ্ট ক্রেতার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে। কিন্তু তার পরেও দুর্গাপুরের বিভিন্ন বাজারে ঘুরে এ দিন ক্রেতাদের ভিড় নজরে এসেছে। তবে অধিকাংশ জায়গায় স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতাও দেখা গিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, টহলদার গাড়ি বিভিন্ন বাজার এলাকায় ঘুরছে। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্ত বলেন, ‘‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন উপলক্ষে এ দিন সকালে দুর্গাপুরের নানা এলাকায় ট্যাবলো বার করা হয়েছে। দুর্গাপুরের সব থানা এলাকায় ঘুরে-ঘুরে মানুষের মধ্যে করোনা-সতর্কতায় সচেতনতা প্রচার করা হয়েছে। কোনও ভাবেই কেউ যাতে ‘লকডাউন’-এর বিধি অমান্য না করেন, তা নিশ্চিত করা হচ্ছে।’’