ছবি: সংগৃহীত।
পারস্পরিক দূরত্ব মেনে উপভোক্তারা যাতে খাদ্যসামগ্রী সংগ্রহ করেন তার জন্য প্রতিটি রেশন দোকানে সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন করেছে জেলা পুলিশ। তাঁদের নির্দেশ দেওয়া ও কোনও রকম অশান্তির খবর দ্রুত পাওয়ার জন্য ‘হোয়াটস অ্যাপ’ গ্রুপও খোলা হয়েছে। এর সঙ্গেই গ্রাহক-অসন্তোষ ঠেকাতে প্রতিটি থানায় ‘ফ্লাইং স্কোয়াড’ গড়ার নির্দেশ দিয়েছে জেলা পুলিশ। জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতীর দাবি, “চার দিনে বেশির ভাগ মানুষই খাদ্যসামগ্রী নিয়ে নিয়েছেন। কোনও অশান্তির খবর আসেনি।’’
জেলা খাদ্য দফতরের দাবি, দু’একটা জায়গায় খাদ্যসামগ্রী কম দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। পাঁচ রেশন ডিলারকে শো-কজ, কয়েকজনের কাছে দেরিতে দোকান খোলার ব্যাখা চাওয়া হয়। সমন্বয় রাখা হয় পুলিশের সঙ্গেও। বিভিন্ন থানার ওসি, আইসিরাও পাহারায় থাকা সিভিক ভলান্টিয়ারদের সঙ্গে বৈঠক করে কী করণীয়, তা জানাচ্ছেন। পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, “ছোট থানার ক্ষেত্রে চারটে, বর্ধমানের বড় থানায় ছ’টি ফ্লাইং স্কোয়াড তৈরি করা হয়েছে। যেখানে যে রকম প্রয়োজন হচ্ছে, সেখানে দ্রুত পুলিশ পৌঁছে যাচ্ছে।’’ খণ্ডঘোষের গণ্ডিবদ্ধ এলাকাতেও পুলিশ, খাদ্য ও স্বাস্থ্য দফতর তিনশো পরিবারকে বাড়ি বাড়ি খাবার পৌঁছে দিচ্ছে।
তবে এর মধ্যেই বর্ধমান শহরে ‘ফুড কুপন’ না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন ডিজিটাল রেশন কার্ডের জন্য আবেদনকারীরা। আবার ডিজিটাল রেশন কার্ড থাকার পরেও ডিলারেরা খাদ্যসামগ্রী ফিরিয়ে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করছেন কিছু গ্রাহক। তাঁরা প্রতিদিন লম্বা লাইন দিচ্ছেন জেলা খাদ্য দফতরে।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বর্ধমান শহরে ডিজিটাল রেশন কার্ডের জন্যে ২২ হাজার আবেদন জমা পড়েছিল। সেপ্টেম্বরে পুরসভার তরফে খতিয়ে দেখে ওই আবেদন খাদ্য দফতরে পাঠানোর কথা ছিল। কিন্তু ‘লকডাউন’-এ বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার ঘোষণার পরে পুরসভার টনক নড়ে। এপ্রিলে পাঠানো হয় ওই আবেদন। তার মধ্যেই চার হাজার আবেদন বেপাত্তা, অভিযোগ খাদ্য দফতরের। প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, “এই লোকগুলোর কাছে না আছে রেশন কার্ড, না আছে ফুড কুপন। এঁরাই প্রতিদিন খাদ্যভবনে লাইনে দাঁড়াচ্ছেন।’’ পুরসভা থেকে তাঁদের বিশেষ ত্রাণের কুপন দেওয়া হচ্ছে।
জেলাশাসক বলেন, “তালিকায় কার নাম আছে, কার নাম নেই সেটা ডিলারের দেখার কথা নয়। গ্রাহকের কাছে ডিজিটাল কার্ড থাকলেই খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ করতে হবে।’’ ওয়েস্টবেঙ্গল এম আর ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সম্পাদক পরেশনাথ হাজরারও বক্তব্য, “ডিলারের খাতায় কোনও বৈধ গ্রাহকের নাম না থাকলে পোর্টালে গিয়ে নতুন সদস্য হিসেবে নাম নথিভুক্ত করতে হবে। তার পরে ‘ডিউ স্লিপ’ দিয়ে পাঁচ-ছ’দিন পরে গ্রাহককে আসতে বলতে হবে। তার মধ্যে ডিলারেরা গ্রাহকের প্রাপ্য খাদ্যসামগ্রী তুলে নিয়ে আসার যথেষ্ট সময় পাবেন।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)