কারখানার গেটের সামনে স্থানীয় মানুষজন। নিজস্ব চিত্র
চাকরিতে নিয়োগের দাবিতে সোমবার পশ্চিম বর্ধমানের সালানপুরের দেন্দুয়ায় একটি বেসরকারি ইস্পাত কারখানার সামনে বিক্ষোভ দেখালেন স্থানীয় কয়েকশো যুবক। প্রায় চার ঘণ্টা ধরে চলে বিক্ষোভ। এর জেরে চিত্তরঞ্জন রোডে বেশ কিছুক্ষণ যানজট হয়। কারখানায় ঢুকতে বাধা পান সংস্থার আধিকারিকেরাও। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় সালানপুর থানার পুলিশ। কারখানা আধিকারিকদের তরফে তাঁদের দাবি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনার আশ্বাস দেওয়ার পরে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সালানপুরের চিত্তরঞ্জন রোড লাগোয়া দেন্দুয়া এলাকায় বছরখানেক আগে তৈরি হয় এই বেসরকারি ইস্পাত কারখানা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তাঁরা প্রথম থেকেই এই কারখানায় স্থানীয় কর্মহীনদের নিয়োগের দাবি জানিয়ে এসেছেন। দাবি মেনে স্থানীয়দের চাকরিও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু লকডাউনের সময়ে তাঁদের ছাঁটাই করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। সম্প্রতি কারখানায় ফের উৎপাদন চালু হয়েছে। অভিযোগ, কিন্তু ছাঁটাই করে দেওয়া স্থানীয়দের চাকরিতে বহাল করা হয়নি। পরিবর্তে ভিন্ রাজ্য থেকে ঠিকাদারের মাধ্যমে শ্রমিক নিয়োগ করে কাজ শুরু করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে তাঁরা এ দিন সকাল থেকে বিক্ষোভ শুরু করেন।
এই বিক্ষোভের নেতৃত্বে ছিলেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা ভোলা সিংহ। তাঁর দাবি, ‘‘স্থানীয়দের বদলে ভিন্ রাজ্যের শ্রমিক এনে এখানে কাজ করানো হচ্ছে। ফলে, স্থানীয় বেকার যুবকেরা কোথায় যাবেন? এটা কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।’’ ভোলাবাবু বলেন, ‘‘লকডাউনের সময়ে সংস্থার অনেক শ্রমিক কাজ হারিয়েছেন। তাঁদেরও বহাল করা হচ্ছে না। প্রয়োজনে বাইরে থেকে দক্ষ কর্মী আনা হোক। কিন্তু স্থানীয়দেরও প্রাধান্য দিতে হবে।’’
এ দিকে, সকাল থেকে বিক্ষোভের জেরে কারখানায় গাড়ি ঢোকা-বেরনো বন্ধ হয়ে যায়। বিক্ষোভ তুলে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসার অনুরোধ জানায় পুলিশ। তাতে রাজি হননি বিক্ষোভকারীরা। ফলে, কারখানায় ঢোকার মুখে আটকে পড়েন সংস্থার কয়েকজন আধিকারিক। কয়েকঘণ্টা এই ভাবে কাটার পরে, সংস্থার আধিকারিকেরা বারাবনির তৃণমূল বিধায়ক বিধান উপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করে বিক্ষোভকারীদের দাবি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনার আশ্বাস দেন। এর পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
মৃত্যুঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় নামে সংস্থার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বিধায়কের সঙ্গে বৈঠক করে আমরা সমাধানসূত্র বের করার চেষ্টা করছি।’’ তাঁর দাবি, ‘‘নিয়োগের ক্ষেত্রে সব সময় স্থনীয়দেরই প্রাধান্য দেওয়া হয়। লকডাউনের সময়ে কারখানার উৎপাদন প্রক্রিয়া বন্ধ থাকায় খুব বেশি শ্রমিকের প্রয়োজন ছিল না। তাই সংশ্লিষ্ট ঠিকা সংস্থাটিকে কম সংখ্যায় শ্রমিক পাঠাতে বলা হয়। এ পর্যন্তই।’’