ফাইল চিত্র
চলতি অর্থবর্ষের (২০২০-২১) প্রথম তিন মাসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, একশো দিনের কাজ প্রকল্পে রাজ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছে পশ্চিম বর্ধমান জেলা। সোমবার ‘নবান্ন’ থেকে এ বার্তা জেলা প্রশাসনের কাছে পৌঁছেছে, এমনই দাবি করেছেন জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি।
‘নবান্ন’-এর তরফে এই অর্থবর্ষে সেই লক্ষ্যামাত্রা বাড়িয়ে ৪৮ লক্ষ করা হয়েছে। জেলাশাসক বলেন, ‘‘ব্লক ও পঞ্চায়েতগুলি অক্লান্ত পরিশ্রম করে জুনের শেষ পর্যন্ত সাড়ে ১১ লক্ষ শ্রম দিবস পূর্ণ করেছে, যা রাজ্যের অন্য কোনও জেলা করে দেখাতে পারেনি। রাজ্য এই সাফল্যের কথা জানিয়েছে। দায়িত্ব আরও বাড়ল।’’
কোন সূত্রে এই ‘সাফল্য’? জেলা প্রশাসনের দাবি, এখন বর্ষার মরসুম। এই সময়ে পুকুর খনন, বাঁধ নির্মাণ, সেচ ব্যবস্থায় জোর দেওয়া এবং বনসৃজনের কাজ জরুরি। নিজেদের প্রয়োজনেই এগুলি কাজে লাগে বলে গ্রামবাসীর মধ্যে উৎসাহ থাকে বলে পর্যবেক্ষণ জেলা প্রশাসনের। ফলে, প্রতিটি ব্লক আধিকারিকদের দিয়ে প্রথমে কাজের তালিকা তৈরি করা হয়। কাজের শুরু ও শেষের নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হয়। স্বভাবতই প্রত্যেক এলাকাতেই ওই নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষের জন্য বেশি সংখ্যায় শ্রমিককে কাজে লাগানো হয়েছিল। ফলে, একের পরে এক কাজ যেমন হয়েছে। তেমনই বেশি সংখ্যায় শ্রমিক নিয়োগের ফলে শ্রম দিবসও বেড়েছে। জেলাশাসক বলেন, ‘‘একশো দিনের প্রকল্পে ব্লক প্রশাসনের সাধারণ প্রবণতা হল দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করা। এর জেরে বেশি সংখ্যায় শ্রমিক নিয়োগ করা হয় না। যার ‘নিট’ ফল কাজের গতি হারায়। আবার শ্রম দিবসের সংখ্যাও বাড়ে না। এই অর্থবর্ষে সে প্রবণতা বদলে দেওয়া সম্ভব হয়েছে।’’
জেলায় একশো দিনের প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক দিব্যেন্দু মজুমদার জানান, এই মুহূর্তে জেলার ৬২টি পঞ্চায়েত এলাকায় একশো দিনের প্রকল্পের কাজ চলছে। জানা গিয়েছে, এপ্রিলের শুরুতে ৪৪টি অঞ্চলে বনসৃজন শুরু হয়েছিল। এই মুহূর্তে বেড়ে তা ৫৪টি হয়েছে। প্রথমে ১২০টি পুকুর খননের তালিকা তৈরি করা হয়েছিল। এখন তা বেড়ে ১৫০টি হয়েছে। ২২টি এলাকায় বাঁধ নির্মাণ করে সেচ ব্যবস্থার উন্নতি করা হচ্ছে। এ ছাড়া, প্রায় ১২০ বিঘা পতিত জমিতে ‘মাটির সৃষ্টি’ প্রকল্পে চাষাবাদের কাজ শুরু হয়েছে। দিব্যেন্দুবাবু আরও জানান, এপ্রিলের গোড়ায় প্রায় সাড়ে ১৫ হাজার শ্রমিক একশো দিনের কাজ শুরু করেন। জেলায় আসা পরিযায়ী শ্রমিকদেরও এই কাজে নিয়োগ করা হয়। গ্রামবাসীর মধ্যে আগ্রহ বৃদ্ধির কারণে এই সংখ্যাটি এই মুহূর্তে প্রায় ৩০ হাজারে পৌঁছেছে বলে দাবি।
জেলা প্রশাসনের কর্তাদের আশা, কাজের এমন ধারা চলতে থাকলে বছরের শেষেও প্রথম স্থান দখলে রাখতে পারবে পশ্চিম বর্ধমান।