Government Land

খাস জমি পুনরুদ্ধারের গতিতে প্রশ্ন

আসানসোলে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়ক, জিটি রোডের লাগোয়া এলাকা, কন্যাপুর, ধেমোমেন, বার্নপুরের মতো নানা জায়গায় জমি দখল করে তা বিক্রির অভিযোগ রয়েছে।

Advertisement

সুশান্ত বণিক

আসানসোল শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০২৩ ০৯:০৬
Share:

সম্প্রতি এই জমি পুনরুদ্ধার করা হয়েছে বলে প্রশাসনের দাবি। আসানসোলের মরিচকোটায়। নিজস্ব চিত্র

সরকারি জমি দখল করে তা ঘিরে দিয়ে প্লট হিসাবে বিক্রি করা হচ্ছে। আসানসোল মহকুমায় অন্তত সাতটি সংস্থা এই কাজ করছে বলে অভিযোগ। সম্প্রতি কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে এ ধরনের জমিগুলি পুনরুদ্ধারে নেমেছে পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন। তবে সে কাজ চলছে শ্লথ গতিতে, দাবি সংশ্লিষ্ট মহলের। বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছেরাজনৈতিক তরজাও।

Advertisement

আসানসোলে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়ক, জিটি রোডের লাগোয়া এলাকা, কন্যাপুর, ধেমোমেন, বার্নপুরের মতো নানা জায়গায় জমি দখল করে তা বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। বছর কয়েক আগে বিষয়টি নিয়ে হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন আসানসোলের বাসিন্দা গোবর্ধন মণ্ডল নামে এক জন। গত এপ্রিলে আদালত নির্দেশ দেয়, যে সব জমি দখল করে এমন কারবার চলছে, সেগুলি পুনরুদ্ধার করতে হবে।

বিষয়টি নিয়ে অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি সংস্কার) সন্দীপ টুডু বলেন, “আমরা কাজ শুরু করেছি। মহকুমাশাসককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক অবস্থায় এ পর্যন্ত প্রায় ৩.১৯ একর সরকারি খাস জমি দখল করার তথ্য সামনে এসেছে।

Advertisement

আসানসোলের মরিচকোটায় জাতীয় সড়কের পাশে একটি সংস্থা জমি প্লট করে কেনা-বেচার কারবার ফেঁদে বসেছিল বলে অভিযোগ। সম্প্রতি ওই সংস্থাটির দেওয়া পাঁচিল ভেঙে, সংশ্লিষ্ট জমিতে নিজেদের বোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছে প্রশাসন। মহকুমাশাসক (আসানসোল) অভিজ্ঞান পাঁজা বলেন, “অতিরিক্ত জেলাশাসকের (ভূমি সংস্কার) নির্দেশেই ওই জমি পুনরুদ্ধার হয়েছে ও সেটি সরকারি খাস জমি হিসাবে উল্লেখ করে বোর্ড ঝোলানো হয়েছে।”

এ দিকে, যে সংস্থাটির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, সেটির তরফে রবি কুমার নামে এক আধিকারিক অবশ্য সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে দাবি করেছেন, “আমরা কোনও সরকারি জমি ঘিরে রাখিনি। প্রশাসন নিজেই ওই জমি চিহ্নিত করে বোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছে।”

তবে যাঁর দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশ, সেই গোবর্ধনের অবশ্য আক্ষেপ, “গত ১০ এপ্রিল নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। কিন্তু গত দেড় মাসে মাত্র একটি সংস্থারই সামান্য এক চিলতে পাঁচিলভাঙা হয়েছে।”

বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন বিরোধী নেতৃত্বও। বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলার মুখপাত্র বাপ্পা চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এলাকার তৃণমূল নেতৃত্বের মদতেই সরকারি খাস জমি দখল করে অবৈধ কারবারের রমরমা চলছে। ফলে, জেলা প্রশাসন চাইলেও কিছু করতে পারবে না।” সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য পার্থ মুখোপাধ্যায়ের তোপ, “মুখ্যমন্ত্রী খাসজমি নিয়ে জমি-ব্যাঙ্ক করার প্রস্তাব দিচ্ছেন। আর ওঁর দলের নেতারা সে সব জমি বিক্রি করে দিচ্ছেন।” যদিও, বিরোধীদের এই অভিযোগে আমল দেননি তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। তাঁর কথায়, “কোনও অবৈধ কাজ প্রশ্রয় দেয় না তৃণমূল। সরকারি খাসজমি দখলের বিরুদ্ধে আমরাই প্রথম থেকে সরব হয়েছি। প্রশাসনও জমি পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু করেছে। বিরোধীরা বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছেন।”

a

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement