ঢুকল জল, রাতেই ঘরছাড়া

গলসি ১ ব্লকের চাকতেঁতুল পঞ্চায়েতেরও বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ভরতপুর গ্রামের একাংশ জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। বেশ কিছু মাটির বাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাসিন্দাদের অন্যত্র সরানোর ব্যবস্থা হয়েছে। বিডিও তারকনাথ দাস জানান, দামোদরের জলে কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পরিস্থিতি নজরে রাখা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৭ ০১:২২
Share:

বানভাসি: আসানসোলের রেলপাড় এলাকায় জমা জল। নিজস্ব চিত্র

ব্যারাজ থেকে ছাড়া জলে প্লাবিত হল কাঁকসা, বুদবুদের বিভিন্ন এলাকা। বেশ কিছু মাটির বাড়িও ধসে গিয়েছে। ডুবে গিয়েছে বেশিরভাগ এলাকায় চাষের জমি। কাঁকসা ও গলসি ১ ব্লকের আধিকারিকেরা এলাকা পরিদর্শন করেন। ত্রাণ দেওয়া হয় ক্ষতিগ্রস্তদের।

Advertisement

মঙ্গলবার রাতে দামোদরের পাশে কাঁকসার সিলামপুর গ্রামের একাংশ জলে ডুবে যায়। গ্রামের কলতলা ঘাট এলাকায় প্রায় ৩০টি বাড়িতে জল ঢুকে যায়। বাসিন্দারা জানান, মঙ্গলবার রাত থেকে জল বাড়তে থাকে দামোদরে। তাঁদের অভিযোগ, প্রশাসনের তরফে অগ্রিম কোনও ঘোষণা ছিল না। রাতের অন্ধকারেই তাঁদের জিনিসপত্র নিয়ে উঁচু জায়গায় সরে যেতে হয়। গবাদি পশুদের রাস্তার উপরেই রাখা হয়। ফাতেমা বিবি, কনিজা বিবি, পিরু শেখরা জানান, রাতে হঠাৎ জল বাড়তে থাকায় কোনওমতে ঘর ছেড়েছেন তাঁরা। বুধবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ এলাকা জলের তলায়। সকালে ঘটনাস্থলে যান কাঁকসার বিডিও অরবিন্দ বিশ্বাস। তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের গ্রামের কমিউনিটি সেন্টারে আশ্রয় নিতে বলেন।

কাঁকসার মলানদিঘি পঞ্চায়েতের বিষ্টুপুর গ্রামে মাসখানেক আগে তৈরি একটি চেকড্যামের বাঁধের একাংশও ভেঙে গিয়েছে। টুমনির জলে চার দিক ভরে গিয়েছে। শিবপুর থেকে জয়দেব যাওয়ার রাস্তার উপর থাকা ভাসাপুলটিও জলের তলায়। ওই এলাকায় বহু কৃষিজমি ডুবে গিয়েছে। বিডিও বলেন, ব্লকের আমলাজোড়া ও বিদবিহার পঞ্চায়েতে ক্ষতি সবথেকে বেশি। বিপর্ষয় মোকাবিলা দফতরকে তৈরি রাখা হয়েছে।

Advertisement

গলসি ১ ব্লকের চাকতেঁতুল পঞ্চায়েতেরও বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ভরতপুর গ্রামের একাংশ জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। বেশ কিছু মাটির বাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাসিন্দাদের অন্যত্র সরানোর ব্যবস্থা হয়েছে। বিডিও তারকনাথ দাস জানান, দামোদরের জলে কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পরিস্থিতি নজরে রাখা হয়েছে।

টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে অন্ডাল বিমানবন্দর। রানওয়েতে দাঁড়িয়ে থাকা বিমানটির খানিকটাও জমা জলে ডুবে গিয়েছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানান, জল সরানোর কাজ শুরু হয়েছে। বুধবার দুপুরে ব্যারাজ থেকে জল ছাড়ার হার দু’লক্ষ কিউসেক ছাড়ায়। তার পরেই জলে ডুবে যায় ব্যারাজের কাছের সীতারামপুর কলোনির বেশ কিছু বাড়ি। বাসিন্দাদের নৌকায় চড়িয়ে অন্যত্র সরানোর ব্যবস্থা করা হয়।

দুর্গাপুর পুরসভার কমিশনার অমিতাভ দাস জানান, মঙ্গলবার থেকেই ত্রাণের কাজ শুরু করেছে পুরসভা ও পুলিশ-প্রশাসন। ত্রিপল ও শুকনো খাবার বিলি করা হয় বিভিন্ন জায়গায়। জলমগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের সরিয়ে স্কুলবাড়িতে রাখা হয়েছে। রাতে হাজারেরও বেশি মানুষকে খাবার দেওয়া হয়। বুধবার দামোদরের মানাচরে পুরসভার পক্ষ থেকে শুকনো ও রান্না করা খাবার দেওয়া হয় বাসিন্দাদের।

অন্ডালের রামপ্রসাদপুরে গ্রামে দামোদর লাগোয়া অংশে জল ঢুকে যায় বুধবার সন্ধ্যায়। ১২টি পরিবারকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে পঞ্চায়েত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement