তপসীতে এখানেই জল বার হওয়া নিয়ে চাঞ্চল্য। নিজস্ব চিত্র।
৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে জামুড়িয়ার তপসীতে সিঙ্গারণ নদীর উপরে সেতু তৈরি হচ্ছে। কিন্তু সেই সেই নির্মীয়মাণ সেতুর পাশেই খোঁড়া গর্ত থেকে জল বেরনোয় বিষয়টি নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
সড়ক কর্তৃপক্ষ তপসী রেলগেটের কাছে উড়ালপুল ও তার অদূরে সিঙ্গারণ নদীর উপরে পুরনো সেতুর পাশেই নতুন সেতুটি তৈরি করছে। সেতু তৈরির প্রয়োজনে সোমবার দুপুরে নদীর কাছে যন্ত্রের সাহায্যে কিছুটা গর্ত খোঁড়া হয়েছিল। কিন্তু সেখানে কর্মরত কর্মীরা জানান, এর পরেই দেখা যায়, ওই গর্ত থেকে প্রচণ্ড তোড়ে জল বেরিয়ে তা নদীতে মিশছে। মঙ্গলবারও জল বেরিয়েছে। তবে,তার গতি কিছুটা কম বলে জানান এলাকাবাসী।
এই পরিস্থিতিতে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। বাসিন্দারা জানান, এলাকায় জাতীয়করণের আগে বেসরকারি ভূগর্ভস্থ কয়লা খনি ছিল। এ ছাড়া, প্রায় পাঁচশো মিটার দূরেই রয়েছে বেলবাঁধ খোলামুখ খনি। লাগোয়া এলাকায় রয়েছে ভূতবাংলা খনিকর্মী আবাসন ও তপসী মাঝিপাড়া। স্থানীয় বাসিন্দা নাথুনি দুষাদ ও রঞ্জিত বাউরিদের আশঙ্কা, ‘‘জামবাদ, হরিশপুরে ধসের ঘটনায় বেশ কিছু বাড়িতে ফাটল ধরেছে। জামবাদে বাড়িশুদ্ধ এক মহিলা মাটির নীচে তলিয়ে গিয়েছিলেন। এখন ভূগর্ভ থেকে জল বেরোচ্ছে। এতে দুশ্চিন্তা হচ্ছে। এলাকায় পরিত্যক্ত ভূগর্ভস্থ খনি থাকায় মাটির নীচে কোনও ফাঁকা জায়গা ভরাট না হওয়ায় জল জমেছে কি না, তা-ও বোঝা যাচ্ছে না।’’
তবে সড়ক কর্তৃপক্ষের ভারপ্রাপ্ত বাস্তুকার রানা রাজকুমার বলেন, ‘‘নদী লাগোয়া এলাকায় কাজ করা হলে, ভূগর্ভে জল জমার সম্ভাবনা ধরে নিয়েই কাজ করা হয়। সেই সঙ্গে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের রানিগঞ্জ থেকে পাণ্ডবেশ্বর পর্যন্ত এলাকা খনি-শিল্পাঞ্চল হওয়ায় ধস, গ্যাস, আগুন বার হওয়ার মতো ঘটনা ঘটতে পারে ধরে নিয়েই আমরা কাজ করি।’’ ঘটনাচক্রে, এর আগে ঝাড়খণ্ডের হাজারিবাগে সড়ক সম্প্রসারণের সময়ে মাটি ফুঁড়ে আগুন বেরিয়েছিল।
যদিও এ ক্ষেত্রে এলাকাবাসীর আতঙ্কের কিছু নেই বলে দাবি সড়ক কর্তৃপক্ষের। তাঁরা জানান, ঘটনাস্থলের অদূরেই একটি পুকুরের আকারে জলাশয় আছে। সেখানকার জলই কোনও ছিদ্র দিয়ে ভূগর্ভে জমা হয়েছে। তাই এই ঘটনা ঘটেছে। তবে তাতে সেতুর কাজও বন্ধ হয়নি বলে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি, জল শুকিয়ে গেলে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে।