ছবি: সংগৃহীত।
কাজ না পেয়ে এক তৃণমূল কর্মীর আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুর্গাপুরে চাপানউতোর তৈরি হয়েছে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সগড়ভাঙা ঘোষ মার্কেট এলাকার ঘটনা। তৃণমূল কর্মী ওই যুবক দুপুরে কুয়োয় ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেন। তাঁকে উদ্ধার করে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
এই ঘটনা কেন, তা নিয়েই শুরু হয় চাপানউতোর। ওই কর্মীর মা বলেন, ‘‘ছেলে ১৭ বছর বয়স থেকে তৃণমূল করে। কত জন কারখানায় কাজ পেল। তৃণমূল নেতাদের কাজের জন্য বলেও ছেলেটা কিছু কাজ পেল না। শুধু বলে, ‘আমার কিছু হল না’। শেষমেশ অবসাদে আত্মহত্যা করতে গেল।’’
ঘটনাটি নিয়ে সরব হয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরাও। স্থানীয় তৃণমূল কর্মী তারকনাথ বসু বলেন, ‘‘দলের পুরনো কর্মীরা কাজ না পেয়ে হতাশ। অথচ নতুন ছেলেরা টাকার বিনিময়ে কারখানায় কাজ পেয়ে যাচ্ছে। এ ভাবে চললে পুরনো কর্মীরা শেষ হয়ে যাবেন। সংগঠনের ক্ষতি হবে।’’ তবে ওই কর্মীর মা জানান, ঘটনার খবর পেয়ে তৃণমূল নেতৃত্ব বাড়িতে আসেন। ওই মহিলার দাবি, ‘‘তৃণমূলের লোকজনের কাছে সাহায্য চেয়েছিলাম। ওঁরা বললেন, ‘আমাদেরই কাজকর্ম নেই। আমরা কোথা থেকে সাহায্য করব!’ ওরা ‘দিদিকে বলো’ শীর্ষক কার্ডে লেখা নম্বরে ফোন করে ঘটনার কথা জানাতে বলল। চার বার চেষ্টা করেও ওই নম্বরে যোগাযোগ করতে পারিনি।’’ পরিবার সূত্রে জানা যায়, ওই তৃণমূল কর্মী পেশায় গাড়ি চালক। কিন্তু টানা কাজ পান না।
এ দিকে, শুক্রবার দুপুরে ওই যুবকের বাড়িতে যান বিজেপির পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই। তিনি বলেন, ‘‘ওই যুবক তৃণমূল কর্মী। শুনলাম, কোনও কাজ না পেয়ে দীর্ঘদিন উনি অবসাদে ভুগছিলেন। ওঁর মাকে কিছু সাহায্য করেছি।’’ ওই যুবকের মা বলেন, ‘‘বিজেপি অর্থ-সাহায্য করেছে। বিপদে পাশে দাঁড়িয়েছেন ওঁরা।’’
তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য বিজেপির এই ‘সাহায্য’ প্রসঙ্গে রাজনীতি করার অভিযোগ তুলেছে। তৃণমূল নেতা উত্তম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পারিবারিক বিবাদের জেরে আমাদের দলের ওই বুথকর্মী আত্মহত্যা করতে যান। তিনি এখন চিকিৎসাধীন। এলাকার কাউন্সিলর, ওয়ার্ড সভাপতি-সহ দলের অন্যরা ওঁর পরিবারের পাশে আছেন। বিজেপি অযথা আমাদের কর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে।’’ সেই সঙ্গে উত্তমবাবু জানান, দুর্গাপুর পুরসভার চেয়ারম্যান মৃগেন্দ্রনাথ পাল-সহ তাঁরা ওই যুবকের বাড়িতে যাবেন।
তবে বিজেপির জেলা সভাপতি লক্ষ্মণবাবু তৃণমূলের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘এর মধ্যে কোনও রাজনীতি নেই। কে কোন দল করেন, সেটা বড় কথা নয়। বিপদে পাশে দাঁড়ানোটাই আমাদের সবার কর্তব্য।’’