কারখানায় দেওয়াল ধসে মৃত্যু দুই শ্রমিকের। — নিজস্ব চিত্র।
দেওয়াল বানিয়ে সেই দেওয়ালের ছায়ায় বসে জিরোচ্ছিলেন। আচমকাই নবনির্মিত দেওয়াল ভেঙে পড়ল মিস্ত্রিদের উপর। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু দুই শ্রমিকের। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও দুই। এই ঘটনায় উত্তেজনা পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসায়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পশ্চিম বর্ধমান জেলার কাঁকসার গোপালপুর বামুনারা শিল্প তালুকের একটি বেসরকারি ইস্পাত কারখানায় বিদ্যুতের সাব-স্টেশন তৈরির জন্য নতুন দেওয়াল তোলা হচ্ছিল। সেই কাজ করছিলেন শ্রমিকেরা। দেওয়ালের একটি অংশ তৈরি করার পর রোদ থেকে বাঁচতে সেই দেওয়ালের ছায়ায় বসেছিলেন চার শ্রমিক। আচমকাই নবনির্মিত দেওয়ালটি ধসে পড়ে শ্রমিকদের উপর। চাপা পড়ে যান চার শ্রমিক। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় চন্দন বাউড়ি (২৮) এবং রাম টুডু (৩২) নামে দুই শ্রমিকের। গুরুতর ভাবে আহত হন বুলু মাল এবং সুরেশ কুমার নামে আরও দুই শ্রমিক। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। চিকিৎসা চলছে।
এ দিকে দেওয়াল চাপা পড়ে শ্রমিকদের মৃত্যুর খবর জানাজানি হতেই উত্তেজনা ছড়ায়। কারখানায় চলে আসেন আশপাশের লোকজন। শুরু হয় তুমুল বিক্ষোভ। মৃত চন্দনের ভাইপো বাপি বাউড়ি বলেন, ‘‘সকালে কাজে এসেছিল কাকা। এখন শুনছি, চার জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে কাকাও আছে। কিন্তু ভিতরে ঢুকতে দিচ্ছে না পুলিশ।’’ গোলমালের খবর পেয়ে কারখানায় আসেন তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির কাঁকসা ব্লকের সভাপতি চন্দন রায়। তিনি পৌঁছতেই বিক্ষোভকারীরা তাঁকে ভিতরে ঢুকতে দেওয়ার আবেদন জানান। শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। তার পর খানিকটা কমে বিক্ষোভের আঁচ। যদিও বিক্ষোভের কথা মানতেই চাননি তৃণমূলের শ্রমিক নেতা। চন্দন বলেন, ‘‘শুনলাম, কারখানার ভিতরে একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে। দু’জনের মৃত্যু হয়েছে, দু’জনকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছে। আর বিশেষ কিছুই জানার সুযোগ এখনও হয়নি। কোনও মৃত্যু হলে আপনজনদের মাথার ঠিক থাকে না। বিক্ষোভ কিছু নয়, বাড়ির লোকেরা খবর শুনে উদ্ভ্রান্তের মতো ছুটে এসেছেন। উত্তেজিত হয়ে পড়ছেন তাঁরা। সেটাই স্বাভাবিক।’’