দমকলকর্মীদের তত্ত্বাবধানে চলেছে প্রশিক্ষণ। নিজস্ব চিত্র
জেলার যে কোনও প্রান্তে নাগরিকদের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের হাত থেকে উদ্ধার করতে ‘আপদমিত্র’ নামে একটি বিপর্যয় মোকাবিলা দল তৈরির তোড়জোড় শুরু হয়েছে। সে দলের সদস্যদের ইতিমধ্যেই প্রশিক্ষণও শুরু করা হয়েছে। আগামী পাঁচ মাসের মধ্যেই এই দল কাজ শুরু করবে বলে পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন সূত্রেজানা গিয়েছে।
পশ্চিম বর্ধমান জেলার বিপর্যয় মোকাবিলা এবং অসামরিক প্রতিরক্ষা দফতরের আধিকারিক তথা এগজ়িকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট তমোজিৎ চক্রবর্তী জানান, জেলার প্রায় ৩০০ জন যুবককে এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। রাজ্য সরকারের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর এবং অসামরিক প্রতিরক্ষা দফতরের যৌথ উদ্যোগে চলছে প্রশিক্ষণ। দলের সদস্যদের দমকল ও ন্যাশনাল ডিজ়াস্টার রেসপন্স ফোর্সের বিশেষজ্ঞেরা নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। জেলা বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের আধিকারিক তমোজিৎ বলেন, “এটি মূলত স্বেচ্ছাশ্রম। এটি কোনও সরকারি চাকরি নয়। তবে কাজ করার সময় দলের সদস্যেরাসাম্মানিক পাবেন।”
কিন্তু এমন দল তৈরির দরকার পড়ল কেন? প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য জুড়েই এই প্রশিক্ষণ চলছে। বস্তুত সারা বছর ধরে রাজ্যের নানা এলাকায় প্রাকৃতিক বিপর্যয় হয়। দুর্গতদের উদ্ধার করতে সব সময় পর্যাপ্ত সংখ্যক দমকল ও বিপর্যয় মোকাবিলা দলের সদস্য পাওয়া যায় না। তাই প্রাথমিক ভাবে উদ্ধার কাজে এমন কিছু স্বেচ্ছাসেবককে কাজে নামাতে এমন উদ্যোগবলে দাবি।
প্রশাসন সূত্রে জানা যাচ্ছে, আসানসোল ও দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল এমনিতেই ‘বিপর্যয়প্রবণ’। জেলার দু’প্রান্তে বয়ে চলেছে অজয় ও দামোদরের মতো দু’টি নদ। বর্ষায় নদ পাড়ের নানা এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। এই পরিস্থিতিতে স্থানীয়দের প্রাথমিক ভাবে উদ্ধারে ‘আপদমিত্র’ দলের সদস্যেরা কাজেনামতে পারবেন।
২০২০-র সেপ্টেম্বরে বর্ষায় আসানসোলের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। সে সময় উদ্ধার কাজে সেনা নামে। তমোজিতের দাবি, তিনি মনে করেন, সে সময় এমন একটি স্বেচ্ছাসেবক দল থাকলে, উদ্ধার কাজে বাড়তি সুবিধা হত। বিষয়টি নিয়ে দমকলের আসানসোলের আধিকারিক দেবায়ন পোদ্দার বলেন,“এটি একটি খুবই গঠনমূলক উদ্যোগ। আমরাও প্রয়োজনে এই দলের সদস্যদের ব্যবহার করতে পারব।” দেবায়ন জানিয়েছেন, কী ভাবে অগ্নিনির্বাপণের কাজ করতে হয়, তা এই দলের সদস্যদের শেখানো হচ্ছে। পাশাপাশি, কোথাও আগুন ধরলে দুর্গতদের কী ভাবে বার করে নিরাপদ জায়গায় আনতে হয়, তা-ও শেখানো হচ্ছে। সে সঙ্গে,আপদমিত্র দলের সদস্যদের ১৯ জনের একটি দলকে বিশেষ ভাবে ডুবুরি-প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। বিশেষজ্ঞ এনে মাইথন জলাধারে তাঁদের এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছ। শুধুমাত্র নদী ও কোলিয়ারির জল ভর্তি পরিত্যক্ত খাদানে উদ্ধার কাজে তাঁদের নামানো হবে।