coronavirus

Coronavirus in West Bengal: পড়ুয়াদের পড়াশোনার মধ্যে রাখতে পাড়ায় শিক্ষকেরা

প্রত্যন্ত এলাকার পড়ুয়ারা কতটা পড়াশোনার মধ্যে থাকবে, সংশয় ছিল শিক্ষকদের মধ্যে।

Advertisement

প্রদীপ মুখোপাধ্যায়

আউশগ্রাম শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৫:৪৯
Share:

গাছতলায় দূরত্ববিধি মেনে ছাত্রছাত্রীদের বসিয়ে চলছে ক্লাস। নিজস্ব চিত্র।

করোনা পরিস্থিতিতে স্কুল বন্ধ। প্রত্যন্ত এলাকার পড়ুয়ারা কতটা পড়াশোনার মধ্যে থাকবে, সংশয় ছিল শিক্ষকদের মধ্যে। সে কারণে নিয়মিত গ্রামে এসে পড়ুয়াদের খোঁজ নিয়েছেন, গাছতলায় বসিয়ে ক্লাসও নিয়েছেন আউশগ্রামের এড়াল পঞ্চায়েতের রাধামোহনপুর জুনিয়র বেসিক স্কুলের কয়েকজন শিক্ষক। তাঁদের এই উদ্যোগের জন্য আজ, সোমবার সংবর্ধনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে গ্রামবাসী জানান।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১২ সালে জুনিয়র হাইস্কুলে উন্নীত হয়েছে স্কুলটি। পড়ুয়া রয়েছে ২৫৪ জন। রাধামোহনপুর, ঘোষপাড়া, গোয়ালপোতার মতো কয়েকটি গ্রাম থেকে পড়ুয়ারা আসে। প্রাথমিকে ৫ জন শিক্ষক ছিলেন। জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয়ে এক জন অতিথি শিক্ষক আছেন। কেউ আসেন ১০ কিলোমিটার দূর থেকে, আবার কারও বাড়ি প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে। স্কুল বন্ধ হয়ে গেলেও পড়ুয়াদের কথা ভেবে তাঁরা নিয়মিত গ্রামে এসে পড়ানো চালিয়ে গিয়েছেন।

গোয়ালপোতার বাসিন্দা রবিউল শেখ, সফিউল শেখ, পরান মুর্মু, বাপি বাগদিরা জানান, লকডাউনের সময় থেকে স্কুল বন্ধ। বাইরে থেকে যে সব গৃহশিক্ষক আসতেন, তাঁরাও আসা বন্ধ করে দেন। ফলে, অনেক জায়গাতেই ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা প্রায় বন্ধ। কিন্তু এই স্কুলের পড়ুয়াদের পড়াশোনা বন্ধ হয়নি। সাইকেল, মোটরবাইকে শিক্ষকেরা নিয়মিত আসছেন। গত ফেব্রুয়ারিতে অবসর নিয়েছেন দেবকীনন্দন কোনার নামে এক শিক্ষক। তবু তিনি এখনও নিয়মিত গ্রামে এসে ছেলেমেয়েদের পড়ান, জানান গ্রামবাসী। স্কুলের পড়ুয়া আসিফা খতুন, রাখি মুর্মু, কুলসুমা মল্লিকেরা জানায়, অনলাইনে ক্লাস করতে সমস্যা হচ্ছিল। এখন শিক্ষকদের কাছে সপ্তাহে ৩ দিন পড়াশোনা করার সুযোগ পেয়ে সুবিধা হচ্ছে।

Advertisement

স্কুলের প্রধান শিক্ষক গৌতম মাজি বলেন, ‘‘আমরা অনলাইনে পড়ানো শুরু করেছিলাম। কিন্তু গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ দরিদ্র। অধিকাংশই দিনমজুরের কাজ করেন। তাঁদের পক্ষে স্মার্ট ফোন কেনা সম্ভব নয়। মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্কও ভাল নয়। ফলে, সমস্যায় পড়ছিল পড়ুয়ারা। তাই শিক্ষকেরা গ্রামের পাড়ায়-পাড়ায় এসে পড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিই।’’ তিনি জানান, প্রত্যেক পাড়ায় গিয়ে গাছতলা, ক্লাব, আটচালা, খেলার মাঠে পড়ুয়াদের ছোট ছোট দলে ভাগ করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পড়াচ্ছেন শিক্ষকেরা। তার ফলে, স্কুল খুললে পড়ুয়াদের সমস্যায় পড়তে হবে না বলে তাঁদের ধারণা।

গুসকরা ১ চক্রের স্কুল পরিদর্শক সোমনাথ সেন বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের স্বার্থে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পড়াতে শিক্ষকেরা যে উদ্যোগী হয়েছেন, তা প্রশংসনীয়।’’ বিডিও (আউশগ্রাম ২) গোপাল বন্দ্যোপাধ্যায়েরও প্রতিক্রিয়া, ‘‘পড়ুয়াদের পাশে থাকার জন্য শিক্ষকদের এই কাজ সাধুবাদের যোগ্য।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement