কেতুগ্রামের মৌগ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। নিজস্ব চিত্র
বাড়িতে নলকূপের জলে মাত্রাতিরিক্ত আয়রন রয়েছে। আর্সেনিক থাকারও আশঙ্কা করছেন কেউ কেউ। বাধ্য হয়ে দু’বছর ধরে জল কিনে খেতে হচ্ছে কেতুগ্রাম ২ ব্লকের অজয়ের পাড়ের চারটি গ্রামের বাসিন্দাদের।
তাঁদের অভিযোগ, নলকূপ থেকে জল তোলার কিছুক্ষণের মধ্যেই হলুদ হয়ে যায়। আয়রনের জেরে কলপাড়, বাসন, বালতিও লালচে হয়ে যাচ্ছে। ওই জল পান করে শরীরও খারাপ হচ্ছে, দাবি বাসিন্দাদের। মৌগ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার সুজাপুর, রঘুপুর, নারায়ণপুর, কমলাপুর গ্রামের কয়েক হাজার পরিবারের অভিযোগ, জলদূষণে ভুগছেন তাঁরা। পঞ্চায়েত প্রধান, কেতুগ্রামের বিধায়ককে সমস্যার কথা জানিয়েও সুরাহা হয়নি, দাবি তাঁদের।
সুজাপুর গ্রামের বুলু ঘোষ বলেন, ‘‘গ্রামবাসীরা প্রাণ বাঁচাতে বাধ্য হয়ে জল কিনে খাচ্ছেন। আমাদের গ্রামের এক ব্যক্তি বছর দুয়েক হল পাম্প মেশিন দিয়ে গভীর নলকূপের সাহায্যে জল তুলে পরিস্রুত করে এলাকায় বিক্রি করছেন। কুড়ি লিটারের এক ড্রাম জলের দাম দশ টাকা। সকাল থেকে বিকেল অবধি এই চারটেগ্রামে বার কয়েক জলের গাড়ি আসা-যাওয়া করে। আর নলকূপের জল গৃহস্থালী, গবাদি পশুর প্রয়োজনে ব্যবহার করা হয়।’’ তাঁদের দাবি, এক দশক আগে থেকেই সমস্যা শুরু হয়। কিন্তু বছর দুয়েক হল জলে অতিরিক্ত মাত্রায় দূষণ ছড়িয়েছে। মৌগ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান বিপাশা মালি থেকে কেতুগ্রামের বিধায়কশেখ সাহানেওয়াজ সকলেই গ্রামের পানীয় জলে দূষণের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘‘এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা সমাধান করা হবে। জমির অভাব ছিল, এখন সেই সমস্যা মিটেছে। ২০২৪ সালে ওই এলাকায় জলপ্রকল্প হবে।’’
কেতুগ্রাম ২ ব্লকের এই চারটি গ্রাম হল পূর্ব বর্ধমানের ছিটমহল। নদিয়া জেলার কালীগঞ্জ থানা লাগোয়া এই গ্রামগুলিতে বর্ধমান জেলা প্রশাসনের সাহায্য বা পরিষেবা সহজে পৌঁছয় না বলে অভিযোগ। জলের সমস্যাও জরুরি ভিত্তিতে সমাধান করা হচ্ছে না, দাবি তাঁদের। ব্লক প্রশাসন জানিয়েছে, জলে অতিরিক্ত আয়রন থাকায় আর্সেনিকমুক্ত পানীয় জলপ্রকল্প গড়তে জমির খোঁজ করছিল জেলা প্রশাসন। জমি মিলেছে। মহকুমাশাসক (কাটোয়া) অর্চনা পনধরিনাথ ওয়াংখেড়ে বলেন, ‘‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েতের সঙ্গে কথা বলে পদক্ষেপ করা হবে।’’