এগিয়ে আসছে অজয়। নিজস্ব চিত্র
গ্রাম থেকে অজয়ের দূরত্ব মেরেকেটে পাঁচশো মিটার। অথচ ফি বছর বর্ষায় অজয় আরও এগিয়ে আসছে গ্রামের দিকে। আর এই পরিস্থিতিতে ঘুম ছুটেছে কাঁকসার বিদবিহার ও বনকাটি পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দাদের। এলাকাবাসীর আশঙ্কা, দ্রুত ভাঙন রোখা না গেলে চাষজমির পাশাপাশি, গ্রামগুলিও বিপন্ন হয়ে পড়বে। তাঁদের অভিযোগ, এই ভাঙন-পরিস্থিতির জন্য অনেকাংশ দায়ী বালির অবৈধ কারবার।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাঁকসার বিদবিহার পঞ্চায়েতের কাঞ্চনপুর, কৃষ্ণপুর, অজয়পল্লি, বনকাটি পঞ্চায়েতের গৌরাঙ্গপুর, নিমটিকুড়ি, সাতকাহনিয়া, বসুধা-সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে অজয়। অজয়ে গ্রীষ্ম বা শীতে তেমন জল থাকে না। কিন্তু বর্ষায় ভয়ঙ্কর আকার নেয় এই নদ।
এলাকাবাসী জানান, এই সব গ্রামগুলির অর্থনীতির ভিত্তি কৃষি। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে অজয়পল্লি থেকে গৌরাঙ্গপুর, এই তিন কিলোমিটার এলাকা ভাঙনের মুখে পড়েছে। প্রতি বর্ষায় ভাঙছে অজয়ের পাড়। অজয়পল্লির বাসিন্দারা জানান, তাঁদের অনেক জমিই চলে গিয়েছে অজয়ের গর্ভে। এই মুহূর্তে যা জমি রয়েছে, সেখান থেকেও অজয়ের দূরত্ব মেরেকেটে ৫০ ফুট। স্থানীয় বাসিন্দা রাহুল মণ্ডল, তরুণ বিশ্বাসদের আশঙ্কা, ‘‘যে ভাবে প্রতি বছর ভাঙন বাড়ছে, তাতে দ্রুত পদক্ষেপ না করা হলে আমাদের গ্রামছাড়া হতে হবে। চাষাবাদ তো করাই যাবে না।’’ কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই এলাকায় এক সময় ভাঙন রুখতে অজয়ের পাড় ঘেঁষে বেশ কিছু গাছ রোপণ করা হয়েছিল। কিন্তু সে সবও জলে তলিয়ে গিয়েছে।
পাশাপাশি, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসীর একাংশের অভিযোগ, বালির অবৈধ কারবারের জন্য বিপদ বাড়ছে। তাঁদের দাবি, অজয়ের নানা জায়গায় বেপরোয়া ভাবে বালি তোলা হচ্ছে। ফলে, গতিপথ পাল্টে ফেলেছে অজয়। বাড়ছে ভাঙনের তীব্রতাও।
যদিও কাঁকসা ব্লক প্রশাসনের দাবি, বালির অবৈধ কারবারে রাশ টানা সম্ভব হয়েছে। কারবার রুখতে নিয়মিত নজরদারিও চালানো হচ্ছে। ভাঙন-পরিস্থিতি প্রসঙ্গে বিডিও (কাঁকসা) সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলছি। ভাঙন রুখতে অবশ্যই পদক্ষেপ করা হবে।’’