অবস্থান-বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
তাঁর এলাকায় উন্নয়নের কাজে বৈষম্যের অভিযোগ তুলে এডিডিএ দফতরে বিক্ষোভ দেখালেন এই সংস্থারই ভাইস চেয়ারম্যান তথা কুলটির বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়। মঙ্গলবার এডিডিএ-র গেটে অবস্থান বিক্ষোভে বসেন তিনি ও তাঁর অনুগামীরা। কুলটির অরবিন্দনগরে দু’বছর আগে অনুমোদন হওয়ার পরেও একটি বড় নর্দমা তৈরি না করাকে কেন্দ্র করে এই অভিযোগ তুলেছেন উজ্জ্বলবাবু। প্রায় দু’ঘণ্টা পরে এডিডিএ-র কর্তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ থামে। তবে এক সপ্তাহের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে ফের অবস্থানে বসার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন উজ্জ্বলবাবু।
আসানসোল পুরসভার ৬৪ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত অরবিন্দনগরের নর্দমাটি নিয়ে তাঁরা ব্যতিব্যস্ত বলে জানান এলাকার বাসিন্দারা। প্রতি বর্ষায় নর্দমা উপচে নোংরা জল বাড়িতে ঢুকে যায়। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, কুলটির রানিতলা, বিএনআর-সহ আশপাশের এলাকার বর্জ্য জল এই নর্দমা দিয়ে বয়ে যায়। অরবিন্দনগরের একেবারে মাঝখান দিয়ে গিয়েছে সেটি। পলি পড়ে বুজে যাওয়া ও নিয়মিত সাফাইয়ের অভাবে বর্ষায় নর্দমাটি নিয়ে সমস্যার শেষ থাকে না। বাসিন্দাদের অভিযোগ, দিন চারেক আগে রাতে বৃষ্টির পরে নর্দমার জল বাড়িতে ঢুকে যায়। স্থানীয় বাসিন্দা ছন্দা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘থইথই জলে আমাদের দাঁড়িয়ে থাকতে হয় গোটা রাত।’’ পর দিনই তাঁরা উপযুক্ত ব্যবস্থার দাবিতে জিটি রোড অবরোধ করেন।
মঙ্গলবার এই একই দাবিতে এডিডিএ দফতরে বিক্ষোভ দেখান উজ্জ্বলবাবু। তিনি নিজে এই দফতরের ভাইস চেয়ারম্যান হয়েও বিক্ষোভে বসতে হল কেন? উজ্জ্বলবাবু জানান, ২০১৭ সালে নর্দমাটি তৈরির জন্য এডিডিএ প্রায় পাঁচ কোটি টাকা অনুমোদন করেছে। দু’বছর কেটে গেলেও সেই কাজে হাত পড়েনি। প্রতি বর্ষায় নর্দমার জল উপছে ভুক্তভোগী হচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। উজ্জ্বলবাবুর বক্তব্য, ‘‘এলাকায় ঢুকতে পারি না। বাসিন্দাদের কাছে মুখ দেখাতে পারি না। এই অবস্থায় ভাইস চেয়ারম্যানের পদে থাকার কোনও মানে হয় না। অবিলম্বে কাজ শুরু না হলে পদ ছেড়ে দেব।’’ এ দিন বিক্ষোভের খবর পেয়ে পৌঁছন এডিডিএ-র দুই পদস্থ আধিকারিক। তাঁরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়ে বিক্ষোভ বন্ধ করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এডিডিএ-র এক কর্তা জানান, কুলটি বিডিও পাড়া থেকে নর্দমাটি জিটি রোডের পাশ দিয়ে বরাকরের দিকে নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু জিটি রোডের পাশে যে অঞ্চল দিয়ে নর্দমাটি নিয়ে যাওয়ার কথা, সেখানে প্রচুর অবৈধ দখলদার রয়েছে। তাদের তুলতে না পারলে কাজ শুরু করা সম্ভব নয়। এডিডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, দখলদার তুলতে পুলিশের সাহায্য নেওয়া হবে। সংস্থার সহকারী কার্যনির্বাহী আধিকারিক অরুণাভ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘নর্দমা তৈরির ব্যাপারে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি।’’