প্রতীকী চিত্র।
তরুণীকে ধর্ষণের দায়ে যুবককে ১২ বছরের কারাদণ্ড দিলেন বর্ধমান ফাস্ট ট্র্যাক আদালতের (দ্বিতীয়) বিচারক অর্জুন মুখোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার ওই সাজার সঙ্গেই দোষীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। রায়ে বিচারক জানিয়েছেন, জরিমানার টাকা নির্যাতিতাকে দিতে হবে, ওই টাকা অনাদায়ে দোষীকে আরও এক বছর সংশোধানাগারে কাটাতে হবে। বুধবারই বিচারক ভাতারের মাহাতা গ্রামের বাসিন্দা শেখ সাবিরউদ্দিনকে (ছিপন) দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন।
মামলার সরকারি আইনজীবী হরিদাস মুখোপাধ্যায় বলেন, “মাত্র ১৫ মাসের মধ্যে শুনানি শেষ করে ধর্ষণের ঘটনায় রায়দান বেশ বিরল।’’ বিচারক জানান, দোষী যুবক যাতে উচ্চ আদালতে আবেদন করতে পারেন, সে জন্য রায়ের প্রতিলিপি তাঁকে দেওয়া হবে। দোষীর আইনজীবী মুক্তিপদ রায়ের দাবি, “এফআইআরের সঙ্গে ওই তরুণীর বক্তব্যের মিল নেই। আমরা উচ্চ আদালতে আবেদন জানাব।’’
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি গত বছর ২৮ সেপ্টেম্বরের। ওই দিন মাহাতা গ্রামের ওই তরুণী মামারবাড়ির ঘরের মেঝেয় শুয়েছিলেন। খাটে শুয়েছিলেন তাঁর মা-সহ দু’জন। ঘরের দরজা পুরোপুরি বন্ধ ছিল না। অভিযোগ, গভীর রাতে দরজা খুলে ঢুকে মুখ চেপে ধরে ওই তরুণীকে প্রতিবেশী সাবিরউদ্দিন ধর্ষণ করে। নির্যতিতার মা ঘুম ভেঙে চিৎকার করতেই সাবিরউদ্দিন পালিয়ে যায়। পরে তরুণীর মামা পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। ৩০ সেপ্টেম্বর মাহাতা বাসস্ট্যান্ড থেকে পুলিশ সাবিরউদ্দিনকে ধরে। ধৃত এবং ওই তরুণীর মেডিক্যাল পরীক্ষা হয়। গোপন জবানবন্দিও নেওয়া হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত সম্পূর্ণ করে চার্জশিট পেশ করেন তদন্তকারী অফিসার। মামলায় ১৩ জন সাক্ষ্য দেন। তদন্তে উঠে আসে, মামার বাড়িতে নয় নিজের বাড়িতেই ধর্ষিত হয়েছেন ওই তরুণী। ধৃতের আইনজীবী আদালতে দাবি করেন, ‘ঘটনাস্থলই যেখানে ঠিক নেই, সেই ঘটনা কী বিশ্বাসযোগ্য?’
সরকারি আইনজীবী এ দিন বলেন, ‘‘পাল্টা জবাবে বলা হয়েছিল, ঘটনাস্থলটা গুরুত্বপূর্ণ না ঘটনাটা? কারণ, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের ফরেন্সিক স্টেট মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসকেরা ধর্ষণ হয়েছে বলে রিপোর্ট করেছেন। আমার মনে হয়, বিচারক ওই রিপোর্টকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন।’’ আইনজীবীরাও জানান, চিকিৎসকদের বক্তব্য ও নির্যাতিতার বক্তব্য এক হওয়ার জন্যই সাবিরউদ্দিনকে দোষী ঘোষণা করেছেন বিচারক।