বলগোনায় এলাকাবাসীর বিক্ষোভ। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
লেভেলক্রসিংয়ের নীচে সাবওয়ের কাজ শুরুর তোড়জোড় হতেই ‘আপত্তি’ জানালেন গ্রামবাসীর একাংশ। বুধবার বর্ধমান-কাটোয়া লাইনের বলগোনার ১৪ নম্বর গেটে বিক্ষোভের মুখে পড়েন রেলের সিনিয়র ইঞ্জিনিয়র (ব্রিজ), রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকেরা। ফিরে যেতে বাধ্য হন তাঁরা। বিকেলে গ্রামবাসীর সঙ্গে আলোচনায় বসেন বিডিও (ভাতার) ও স্থানীয় বলগোনা পঞ্চায়েত। গ্রামবাসীর দাবি, ওই লাইনের বেশ কয়েকটি জায়গায় সাবওয়ে তৈরি হয়েছে। সেখানে সারা বছর জল জমে থাকে। সুষ্ঠু নিকাশি ব্যবস্থা ও সাবওয়ে তৈরির সময়েও তাঁরা যাতে নির্বিঘ্নে খেতে যেতে পারেন, সে কারণে বিকল্প রাস্তার দাবি জানান তাঁরা।
বিডিও (ভাতার) তপন সরকার বলেন, ‘‘সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ঘটনার কথা জানানো হবে। গ্রামবাসীরা যাতে ক্ষতির মুখে না পড়েন, তা দেখার জন্য বলা হবে।’’ রেলের এক আধিকারিকের দাবি, ‘‘দীর্ঘদিন ধরেই ওই সাবওয়ে তৈরিতে আপত্তি জানাচ্ছেন এলাকার লোকজন। নকশার সঙ্গে বাস্তব পরিস্থিতি মিলিয়ে দেখতে গেলে, এ দিন বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়। রিপোর্ট করে ডিআরএম (হাওড়া)-কে পাঠানো হবে। আমাদের তরফে কিছু প্রস্তাবও রাখা হবে।’’ হাওড়া ডিভিশনের সিনিয়র ইঞ্জিনিয়র (ব্রিজ) বাসুদের রজক, ইঞ্জিনিয়র (ব্রিজ) শশাঙ্ক সাহা ও সেকশন ইঞ্জিনিয়র (বর্ধমান) আনন্দমোহন দাসেরা জানান, বিডিওর সঙ্গে দেখা করে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন তাঁরা। স্থানীয় পঞ্চায়েতের সঙ্গেও কথা হয়েছে।
রেল সূত্রে জানা যায়, বর্ধমান-কাটোয়া সিঙ্গল লাইনে লেভেলক্রসিং রাখতে চাইছেন না হাওড়া ডিভিশনের কর্তারা। ওই লাইন দিয়ে দূরপাল্লার ট্রেন চালানোর চিন্তা করছে রেল। সে কারণে বেশির ভাগ জায়গায় সাবওয়ে গড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ওই লাইনের শ্রীখণ্ড থেকে সাঁওতা পর্যন্ত বেশ কয়েকটি জায়গায় সাবওয়ে হয়েছে। ভাতার থেকে বর্ধমান ঢোকার মুখে লেভেলক্রসিং তুলে সাবওয়ে তৈরি করা হচ্ছে। যদিও গ্রামবাসীর অভিযোগ, ওই সব সাবওয়েতে সারা বছর জল জমে থাকে। বর্ষাকালে জল গ্রামে, খেতে ঢুকে যায়। অল্প বৃষ্টিতেই ভেসে যায় গ্রাম। সাবওয়ে তৈরি হলে সমস্যা আরও বাড়বে, দাবি তাঁদের।
ভাগবতী মাঝি, কুমকুম মাঝি, চন্দন হাজরা, মোমেজুল শেখদের দাবি, ‘‘অন্য সাবওয়ের অবস্থা দেখেই আমরা রেলগেটের নীচে দিয়ে রাস্তা তৈরিতে আপত্তি জানিয়েছি।’’ তাঁদের আরও দাবি, ভাতার-সামন্তী রোডের উপরে লেভেলক্রসিং তুলে সাবওয়ের কাজ চলছে। দেড়-দু’বছর ধরে সেই কাজ শেষ হয়নি। স্থানীয় মানুষজনকে রেললাইনের নীচে খানা-খন্দ রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে হয়।
ওই লাইনের ছ’নম্বর গেটেও সাবওয়ে তৈরিতে আপত্তি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সেখানেও কাজ এগোয়নি। বলগোনা পঞ্চায়েতের প্রধান আমজাদ শেখ ও সদস্য হেমন্তকৃষ্ণ যশের দাবি, ‘‘বিডিও-র উপস্থিতিতে গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। গ্রামবাসীরা সুষ্ঠু নিকাশি ব্যবস্থা ও সাবওয়ে তৈরির সময়ে বিকল্প রাস্তা তৈরির দাবি জানিয়েছেন।’’