প্রতীকী ছবি
ইংরেজি বইয়ে ‘ইউ’ অক্ষরের ব্যবহার বোঝাতে লেখা হয়েছে ‘আগলি’, সেই সঙ্গে ছাপা হয়েছে এক কৃষ্ণাঙ্গের ছবি— অভিযোগ জমা পড়েছিল রাজ্যের শিক্ষা দফতরে। তার ভিত্তিতে বর্ধমানের যে স্কুলে ওই বইটি পড়ানো হচ্ছে, সেটির দুই শিক্ষিকাকে সাসপেন্ড করার কথা জানালেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
পুলিশের বিরুদ্ধে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডকে খুনের অভিযোগে তপ্ত হয়ে উঠেছে আমেরিকা। বর্ণবৈষম্যের প্রতিবাদে সরব হয়েছেন অনেকেই। তারই মধ্যে বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল গার্লস স্কুলে প্রাক-প্রাথমিক বিভাগে ইংরেজির রেফারেন্স বই হিসেবে ব্যবহৃত বইটিতে ‘আগলি’ শব্দের সঙ্গে কৃষ্ণাঙ্গের মুখের ছবি ব্যবহারের নিন্দা করেছেন অনেক অভিভাবক। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা দফতরে অভিযোগ করেন কলকাতার বঙ্গবাসী (সান্ধ্য) কলেজের এক অধ্যাপক। রৌরকেলা এনআইটি-র এক অধ্যাপকও এ নিয়ে সরব হন।
বৃহস্পতিবার শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা স্তম্ভিত। এই বই ব্যবহার করা যাবে না। কেন এই রেফারেন্স বই ব্যবহার করা হল, সে জন্য শ্রাবণী মল্লিক ও বর্ণালী ঘোষকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।’’ শ্রাবণীদেবী ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা। বর্ণালীদেবী প্রাক-প্রাথমিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা। বর্ণালীদেবীর বক্তব্য, ‘‘আমি নামেই ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা। পুরোটাই নজরদারি করেন শ্রাবণীদেবী।’’ যদিও শ্রাবণীদেবীর পাল্টা দাবি, ‘‘আমি স্কুলের ওই বিভাগের প্রশাসনিক প্রধান। পঠনপাঠনের সঙ্গে আমার যোগ নেই। বই বাছাইও আমি করি না।’’ তিনি জানান, ঘটনাটি কানে আসার পরেই যে দু’জন শিক্ষিকা বই বাছাই করেন তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে এক জন জানিয়েছেন, বিষয়টি তাঁদের নজর এড়িয়ে গিয়েছিল।
পূর্ব বর্ধমান জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) শ্রীধর প্রামাণিক জানান, বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত তাঁদের কাছে সাসপেন্ড করার বিষয়ে কোনও নির্দেশিকা আসেনি। জেলা স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক) স্বপনকুমার দত্ত বলেন, ‘‘বর্ণালীদেবীকে সাসপেন্ড করার প্রক্রিয়া চলছে।’’ বইটির প্রকাশক শিশিরকুমার পাল বলেন, ‘‘এই ত্রুটি অনিচ্ছাকৃত, নজর এড়িয়ে গিয়েছে। ওই বই হাজার দু’য়েক ছাপা হয়েছিল। তুলে নেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে। গোটা ঘটনায় আমরা দুঃখিত।’’