আখলপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে জটলা। নিজস্ব চিত্র
স্নান করতে নেমে পুকুরে তলিয়ে গিয়ে মৃত্যু হল সপ্তম শ্রেণির দুই পড়ুয়ার। বুধবার পশ্চিম বর্ধমানের জামুড়িয়া গ্রাম লাগোয়া দাশেরবাঁধ পুকুরে ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ জানায়, মৃত রুদ্র স্বর্ণকার (১৩) এবং সুরজিৎ গড়াই (১৪) জামুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা ছিল। তারা রাজপুর নন্ডী উচ্চ বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রণিতে পড়ত।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল ১০টায় ওই দু’জন পুকুরে স্নান করতে নামে। স্থানীয় বাসিন্দা কল্যাণ পাল জানান, সে সময় কয়েক জন মহিলা পুকুর ঘাটে ছিলেন। ওই মহিলাদের চিৎকার শুনে ঘাটে পৌঁছন কল্যাণ। তিনি পুকুরে নেমে দু’জনের সন্ধান করার চেষ্টাও করেন। খোঁজ না পেয়ে গ্রামবাসীকে খবর দেন। গ্রামবাসীই দু’জনকে উদ্ধার করেন।
ওই দুই কিশোরকে আখলপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনার পরেই বিষয়টি নিয়ে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে এলাকায়। ওই স্কুলটির ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক (টিচার ইনচার্জ) জীতেন দত্ত বলেন, “ওরা দু’জনই একই ক্লাসের একই ‘সেকশনে’ পড়ত। অত্যন্ত দুঃখের ঘটনা।” স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রুদ্ররা দুই ভাই। সুরজিৎ বাবা-মায়ের একমাত্র ছেলে। রুদ্র জামুড়িয়া গ্রামের নামোপাড়া ও সুরজিৎ মাঝপাড়ার বাসিন্দা ছিল। এ দিনের ঘটনায় শোকবিহ্বল এলাকা। পড়শিরা দু’টি বাড়িতেই ভিড় জমিয়েছেন। রুদ্রর বাবা মঙ্গল ও সুরজিতের বাবা সঞ্জয়েরা জানান, দু’জনেই সাঁতার জানত না। বাড়িতে না বলেই পুকুরে স্নান করতে গিয়েছিল। সঞ্জয় বলেন, “এই শোক কী ভাবে সামলে উঠব জানি না!” আর মঙ্গলের আবেদন, “অভিভাবকদের আরও বেশি করে আগলে রাখতে হবে ছেলেমেয়েদের। কী যে ঘটে গেল, এখনও বুঝতে পারছি না!”
পুলিশ জানিয়েছে, দু’টি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে। দেহ দু’টি ময়না-তদন্তের জন্য আসানসোল জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।