উৎসব বদলে গেল শোকে

অজয়ে তলিয়ে মৃত দুই

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে গ্রামেই কদম্বখণ্ডি ঘাটে স্নান করতে যায় পাঁচ বন্ধু। তাদের মধ্যে ছিল বীরকুলটি এনজিএম হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র পুষ্পেন্দু ঘটক (১৫) এবং দুর্গাপুরের বেসরকারি স্কুলের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সুপ্রতিম মুখোপাধ্যায় (১৬)।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জামুড়িয়া শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০১৭ ০০:৪৪
Share:

উদ্ধার: বুধবার বীরকুলটিতে। নিজস্ব চিত্র

দুই পরিবারেই চলছে কালীপুজোর তোড়জোড়। অচমকা খবর, বাড়ির দুই ছেলে তলিয়ে গিয়েছে অজয়ে। পরিবার ও গ্রামের উৎসবের মেজাজ বদলে গেল শোকে। বুধবার, জামুড়িয়ার বীরকুলটি গ্রামের ঘটনা। হিরাপুর, দুর্গাপুর ব্যারাজের পরে এ বার জামুড়িয়া। শিল্পাঞ্চলবাসীর ক্ষোভ, দামোদর-অজয়ে একের পর এক তলিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। অথচ, প্রশাসনের হেলদোল নেই।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে গ্রামেই কদম্বখণ্ডি ঘাটে স্নান করতে যায় পাঁচ বন্ধু। তাদের মধ্যে ছিল বীরকুলটি এনজিএম হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র পুষ্পেন্দু ঘটক (১৫) এবং দুর্গাপুরের বেসরকারি স্কুলের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সুপ্রতিম মুখোপাধ্যায় (১৬)। এ দিন সকালেই দুর্গাপুর থেকে গ্রামের বাড়ি বীরকুলটিতে আসে সুপ্রতিম।

কী ঘটেছিল এ দিন? স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পুষ্পেন্দু, সুপ্রতিম-সহ আরও এক জন অজয়ে স্নান করতে নামে। খানিক দূর যেতেই তারা জলে তলিয়ে যেতে থাকে। সেই সময়ে, পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকা বিশাল সূত্রধর নামে এক ব্যক্তি, এক কিশোরকে টেনে তুলতে পারলেও, বাকিদের পারেননি।

Advertisement

খবর চাউর হতেই গ্রামবাসীরা জড়ো হন অজয়ের পাড়ে। পুলিশের উপস্থিতিতে বাসিন্দারাই ১২টা নাগাদ পু্ষ্পেন্দু ও খানিক বাদে সুপ্রতিমকে উদ্ধার করে। তাদের বাহাদুরপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে জানান।

ছেলের তলিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়ার পরে কথা বলার মতো অবস্থায় নেই পুষ্পেন্দুর বাবা মনোজবাবু ও মা রিনাদেবীর। একই হাল সুপ্রতিমের বাবা প্রিয়তমবাবু এবং মা চিত্রাদেবীরও। মাঝেসাঝেই তাঁরা জ্ঞান হারাচ্ছেন।

এই ঘটনার পরেই দামোদর-অজয়ের ঘাটগুলির নিরাপত্তা নিয়ে তীব্র ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন গ্রামবাসীরা। এর আগে হিরাপুরে মন্ত্রী মলয় ঘটকের দাদা বা দুর্গাপুরে দুই ছাত্রের তলিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

বীরকুলটির বাসিন্দা সরোজ দত্ত, বাপ্পা মুখোপাধ্যায়দের ক্ষোভ, ‘‘ক’দিনের বৃষ্টিতে ঘাট থেকে অদূরেই গভীর জল রয়েছে। সাঁতার না জানলেই বিপদ। প্রশাসনের উচিত বর্ষার শুরুতেই সতর্কতার নোটিস-বোর্ড ঝোলানোর। একই সঙ্গে অগভীর এলাকা চিহ্নিত করে স্নানের জন্য তারের ব্যারিকেড তৈরিও প্রয়োজন।’’

গ্রাম সূত্রে জানা গিয়েছে, একই ভাবে প্রায় সাত বছর আগে স্নান করতে নেমে তলিয়ে যান যুবক পানিফলা বাউরি। পুলিশ জানায়, ওই দুই কিশোরের দেহ ময়না-তদন্তের জন্য আসানসোলে জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বিডিও (জামুড়িয়া) অনুপম চক্রবর্তী বলেন, ‘‘গ্রামীণ এলাকায় এই ধরনের ঘাট যেখানে রয়েছে সেখানে লাগাতার সচেতনতা প্রচার চালানো হবে। সেই প্রচারে বাসিন্দাদেরও সামিল হতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement