মাথরুনে উল্টোল বাস। নিজস্ব চিত্র
পৃথক দু’টি দুর্ঘটনায় দু’জনের মৃত্যু হল কাটোয়া মহকুমায়। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন পড়ুয়া-সহ প্রায় ৫০ জন। রবিবার রাতে কাটোয়ার করজগ্রামের কাছে ট্রাকের ধাক্কায় দুই মোটরবাইক আরোহীর মৃত্যু হয়। সোমবার দুপুরে মঙ্গলকোটের মাথরুনে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায় যাত্রিবাহী বাস।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রবিবার রাত সাড়ে ৮টা নগাদ চান্ডুলিতে নবান্ন উৎসব থেকে মালডাঙা রাজ্য সড়ক ধরে মোটরবাইকে ফিরছিলেন আক্রার বাসিন্দা কার্তিক মহল্লাদার (৪৪) ও তাঁর ভগ্নিপতি সনৎ মণ্ডল (৪৬)। করজগ্রাম মোড়ের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকের পিছনে ধাক্কা মারে বাইকটি। পুলিশ জানায়, বাইকটি দ্রুত গতিতে যাচ্ছিল। আরোহীদের মাথায় হেলমেট ছিল না। অন্ধকরে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকটি দেখতে না পেয়েই দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলেই দু’জনের মৃত্যু হয়। মৃতদের পরিজন ও প্রতিবেশীদের আক্ষেপ, হেলমেট থাকলে হয়তো প্রাণে বেঁচে যেতেন দু’জনই।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাত বাড়লেই ওই রাস্তায় বালি, পাথর-সহ নানা মালপত্র নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে বহু ট্রাক। সেগুলিতে আলোও জ্বলে না। রাস্তাতেও পর্যাপ্ত আলো নেই। ফলে, প্রায়ই ছোটবড় দুর্ঘটনা ঘটে বলে দাবি চান্ডুলি, সিঙ্গি, করজগ্রামের বাসিন্দাদের। গাড়িগুলি যাতে রাস্তা আটকে দাঁড়িয়ে না থাকে, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস পুলিশের।
এ দিন দুপুর ২টো নাগাদ কাটোয়া থেকে গুসকরাগামী একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাশের ধানখেতে উল্টে যায়। ঘটনাটি ঘটে নতুনহাট রাজ্য সড়কে মাথরুন নবীনচন্দ্র বিদ্যায়তনের অদূরে। স্থানীয় সূত্রের খবর, একটি গাড়িকে জায়গা দিতে গিয়েই নিয়ন্ত্রণ হারান বাসের চালক। বাসে ওই স্কুলের বেশ কিছু পড়ুয়া ছিল। এ দিন দুপুর ২টো থেকে পঞ্চম ও ষষ্ঠ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা ছিল। জখম হয় কুলসোনা, ভাল্যগ্রাম থেকে পরীক্ষা দিতে আসা জনা পঁচিশ ছাত্রছাত্রী। তাদের মধ্যে সাত জনকে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ছাড়া আহত ৪৩ জন যাত্রীকেও কাটোয়া হাসপাতালে পাঠানো হয়। গুরুতর জখম চৈতন্যপুরের বছর সাতচল্লিশের বসন্ত রায় ও ভাল্যগ্রামের বছর পঁচিশের অনুপ সর্দারকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
দুর্ঘটনাস্থলে যান মঙ্গলকোটের যুগ্ম বিডিও নির্মল বিশ্বাস। আহতদের হাসপাতালে পাঠাতে ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে একটি অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করা হয়। হাসপাতালে ভর্তি ষষ্ঠ শ্রেণির তনিমা দাস, মহম্মদ সাবির আলিরা বলে, ‘‘বাস খুব জোরে চলছিল। আস্তে চালতে বললেও চালক শোনেননি।’’ মাথরুনের স্কুলটির প্রধান শিক্ষক আব্দুল ওয়াজেদ আনসারি বলেন, ‘‘ওই পড়ুয়ারা সুস্থ হলে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।’’