—প্রতীকী ছবি।
পঞ্চায়েত স্তরের তৃণমূল ও সিপিএমের দুই প্রার্থী, যাঁরা সম্পর্কে কাকা-ভাইপো, তাঁরা বিহারের ভোটার। অথচ, এ রাজ্যের ভোটার তালিকাতেও তাঁদের নাম রয়েছে। এমনই অভিযোগ করে তাঁদের প্রার্থিপদ বাতিলের দাবি জানিয়েছেন বিজেপির বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। এ দিকে, অন্য এক তৃণমূল প্রার্থীর জাতিগত শংসাপত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাঁরও প্রার্থিপদ বাতিলের দাবি জানিয়েছে সিপিএম। প্রথম ঘটনাটি রানিগঞ্জের জেমারি পঞ্চায়েতের এবং দ্বিতীয়টি অন্ডালের উখড়া পঞ্চায়েতের।
জেমারি পঞ্চায়েতের ২৪১ নম্বর বুথ থেকে পঙ্কজ যাদব ও জয়প্রকাশ যাদব যথাক্রমে তৃণমূল ও সিপিএমের প্রার্থী হয়েছেন। রয়েছেন বিজেপি প্রার্থীও। বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালের অভিযোগ, বিহারের সূরযগড় বিধানসভার ভোটার তালিকায় ৩০৮ নম্বর বুথের ৮৫৫ ক্রমিক নম্বরে জয়প্রকাশ এবং ৩০৯ নম্বর বুথের ২৭৭ ক্রমিক নম্বরে পঙ্কজের নাম নথিভুক্ত। বিধায়কের বক্তব্য, “ভিন্-রাজ্যের ভোটার তালিকায় নাম থাকলেও, এখানে ওঁরা কী করে ভোটার ও প্রার্থী হলেন! ওঁদের প্রার্থিপদ বাতিলের জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে আর্জি জানানো হয়েছে।”
পঙ্কজ জানান, তিনি কয়েক বছর সূরযগড়ে ছিলেন। কিন্তু ২০০৯-এ জেকে নগরে চলে আসেন। তখন থেকেই পশ্চিমবঙ্গের ভোটার তালিকায় তাঁর নাম রয়েছে। ২০২২-এ জানতে পারেন, সূরযগড়ে ভোটার তালিকায় তাঁর নাম রয়ে গিয়েছে। পঙ্কজের বক্তব্য, “২০২২-এর ২৭ নভেম্বর সূরযগড়ে সংশ্লিষ্ট দফতরে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার জন্য লিখিত আবেদন জানিয়েছিলাম। তার পরে কী ঘটেছে, জানি না। এটা দেখার দায়িত্ব প্রশাসনের। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময়ে ব্লক অফিসেও বিষয়টি জানিয়েছিলাম।” এ দিকে, বছর ৬২-র জয়প্রকাশ জানান, তিনি জেকে নগরে খনিকর্মী ছিলেন। বরাবরই তিনি সেখানেই থাকেন। সূরযগড়ে তাঁর বাড়ি হলেও সেখানে কোনও দিন ভোট দেননি। ফলে, তিনি জানেনই না বিহারে তাঁর নাম ভোটার তালিকায় রয়েছে কি না।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী হলে, সংশ্লিষ্ট রাজ্যের সংশ্লিষ্ট এলাকার ভোটার হতেই হয়। আর নিয়ম অনুযায়ী, একটি রাজ্যেরই ভোটার হওয়া সম্ভব। এ দিকে, বিডিও (রানিগঞ্জ) অভীক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “নথিপত্র সব ঠিক আছে। তা খতিয়ে দেখেই মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া হয়েছে। কোথাওকোনও ত্রুটি নেই।”
পাশাপাশি, অন্ডালের উখড়া পঞ্চায়েতের ১১ নম্বর সংসদে (অনগ্রসর শ্রেণি সংরক্ষিত) তৃণমূল প্রার্থী অনিল বার্নওয়ালের প্রার্থিপদ নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী, সিপিএম প্রার্থী আলম খান। তিনি জানান, নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটেঅনিলকে সাধারণ শ্রেণিভুক্ত বলা হচ্ছে। অথচ, তিনি অনগ্রসর শ্রেণির জন্য সংরক্ষিত আসন থেকে ভোটে লড়ছেন। আলম জানান, বিষয়টি অন্ডাল ব্লক প্রশাসন এবং দুর্গাপুর মহকুমা প্রশাসনের কাছে জানিয়ে অনিলের প্রার্থিপদ বাতিলের দাবি জানিয়েছেন। অনিলের বক্তব্য, “আমরা বেনিয়া সম্প্রদায়ের। সেই সূত্রে অনগ্রসর শ্রেণি হিসাবেই নথিভুক্ত। আলম দিশাহারা হয়ে ভুল বকছেন।” বিডিও (অন্ডাল) সুদীপ্ত বিশ্বাসও দাবি করেন, “যাবতীয় নথিপত্র খতিয়ে দেখেই মনোনয়পত্র জমা নেওয়া হয়। তার পরে প্রার্থিপদ অনুমোদনকরা হয়েছে।”