আসানসোল জেলা হাসপাতালে শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র।
সময়, দুপুর ১২টা। আসানসোল জেলা হাসপাতালের ‘পর্যবেক্ষণ কক্ষ’। সেখানেই ‘টিকা’ নিয়ে আসা এক ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে পড়লেন! দ্রুত সেখানে এসে ‘র্যাপিড রেসপন্স টিম’ ওই ব্যক্তিকে নিয়ে গেল পাশেই একটি বিশেষ ঘরে। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করলেন চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরা।
— গোটা বিষয়টিই ‘ড্রাই রান’ বা মহড়া। টিকাও আসল নয়। কিন্তু এ ভাবেই গোটা রাজ্যের সঙ্গে ওই হাসপাতাল-সহ জেলার তিন জায়গায় শুক্রবার হয়েছে কোভিড টিকার মহড়া। ছিলেন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের ডিস্ট্রিক্ট মেটারনিটি চাইল্ড হেল্থ অফিসার স্বপন বিশ্বাস, জেলা হাসপাতালের সুপার নিখিলচন্দ্র দাস এবং অন্য চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরা।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আসানসোল জেলা হাসপাতাল, আসানসোলের ধদকা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও দুর্গাপুরের লাউদোহা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সফল ভাবে টিকার মহড়া করা হয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) অশ্বিনীকুমার মাজি বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশমতো এ দিন সফল ভাবে মহড়া হয়েছে। কোথাও সমস্যা হয়নি। টিকা দিতে গিয়ে যাতে কোনও রকম সমস্যায় না পড়েন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা, তা নিশ্চিত করতেই এই মহড়া।’’ স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার প্রতি কেন্দ্রে ২৫ জন স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসক এই মহড়ায় যোগ দেন।
জেলা হাসপাতালের টিকা-পরিকাঠামো দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন সুপার নিখিলচন্দ্র দাস। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরনো ভবনে এই পরিকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। কী ভাবে হবে টিকাকরণ প্রক্রিয়াটি? নিখিলবাবু জানান, একটি প্রতীক্ষালয় (‘ওয়েটিং রুম’) করা হয়েছে। সেখানে টিকা নিতে আসা লোকজন অপেক্ষা করবেন। স্বাস্থ্যকর্মীরা রোগীর পরিচয়পত্র এবং স্বাস্থ্য দফতরের পাঠানো নামের তালিকা মিলিয়ে দেখে সংশ্লিষ্টকে টিকা নেওয়ার কক্ষে (‘ভ্যাকসিনেশন রুম’) পাঠাবেন। সেখানে টিকা দেওয়ার পরে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে পাশেই পর্যবেক্ষণ কক্ষে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে দু’জন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী আধ ঘণ্টা ধরে পর্যবেক্ষণ করবেন। যদি কেউ অসুস্থ হয়ে পড়েন, তবে দ্রুত তাঁকে বিশেষ ঘরে নিয়ে যাবে ‘র্যাপিড রেসপন্স টিম’। তার পরে সেখানে চিকিৎসা করবেন ডাক্তারেরা। তাঁকে আধ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ করার পরে যদি তিনি সুস্থ হয়ে যান, তবে, পরবর্তী টিকাকরণের তারিখ জানিয়ে ছেড়ে দেওয়া হবে।
আপাতত কারা টিকা পাবেন, তা-ও ঠিক করেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের ১৬ হাজার চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীকে টিকা দেওয়ার জন্য নাম নথিভুক্ত করা হয়েছে। তা ছাড়া, টিকা মজুত করে রাখার জন্য ব্লক থেকে জেলা স্তরে ২৮টি ‘কোল্ড চেন পয়েন্ট’-এর পরিকাঠামো তৈরির কাজ শুরু করা হয়েছে। টিকাকরণের জন্য কাজে লাগানো হচ্ছে আসানসোল পুরসভার স্বাস্থ্য পরিকাঠামোকেও, জানায় স্বাস্থ্য দফতর। এ বিষয়ে পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর বৈঠকও করেছে বলে জানান দফতরের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক
দিব্যেন্দু ভগত।