এই জঙ্গলেই গাছ কাটার অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র papan.news@gmail.com
বন দফতরের বিট অফিসের নাকের ডগায় পূর্ণ-বয়স্ক কয়েকশো গাছ কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বারাবনিতে। স্থানীয়দের অভিযোগ, দফতরের গাফিলতিতেই এই ঘটনা। খবর পেয়ে শুক্রবার ঘটনাস্থলে যান ডিএফও (দুর্গাপুর)
বুদ্ধদেব মণ্ডল।
বারাবনি ব্লকের সরিষাতলি অঞ্চলে বন দফতরের কয়েকশো হেক্টরের একটি বনাঞ্চল আছে। এখানে বন দফতরের একটি বিট অফিসও রয়েছে। অভিযোগ, সে অফিস থেকে মাত্র ৭০ মিটার দূরত্বে অন্তত তিনশো গাছ কাটা হয়েছে। দুষ্কৃতীরা কেটে ফেলা সব গাছ নিয়ে যেতে পারেনি। জঙ্গলের মধ্যেই কিছু ফেলে রেখে দিয়েছে। শুক্রবার সকালে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জঙ্গলে কাটা গাছগুলি দেখে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কেটে নেওয়া গাছগুলির মধ্যে রয়েছে শাল, সেগুন ও শিশু।
কেটে নেওয়া গাছগুলির বর্তমান বাজারমূল্য কয়েক লক্ষ টাকা। এলাকাবাসী বন দফতরের বিট অফিসে বিষয়টি জানাতে যান।
কিন্তু সেখানে কারও দেখা মেলেনি বলে অভিযোগ।
এলাকাবাসী বিষয়টি নিয়ে তীব্র ক্ষোভপ্রকাশ করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান ডিএফও (দুর্গাপুর) বুদ্ধদেব। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তিনি বলেন, “এই ঘটনার বিভাগীয় তদন্ত করা হবে। থানায় অভিযোগও জানানো হয়েছে।” পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতি বছর ঘটা করে বনসৃজন উৎসব হয়। জঙ্গল জুড়ে গাছের চারা রোপণ করা হয়। অথচ বন দফতরের গাফিলতিতেই দুষ্কৃতীরা গাছ কেটে সাফ করে দিচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বাসিন্দার অভিযোগ, বন দফতরের একাংশ অসাধু কর্মী, আধিকারিকদের সঙ্গে অবৈধ কাঠকলগুলির যোগসাজশ রয়েছে। সে সূত্রেই এই ঘটনা। দিন কয়েক আগেই এই সরিষাতলি বিট অফিসের অন্তর্গত একটি জঙ্গলে অজয় নদের বালি মজুত করার অভিযোগ উঠেছিল। এর ফলে এই বর্ষায় গাছের চারা নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। স্থানীয়েরা অভিযোগ তুলতেই বন আধিকারিকেরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বালি সরানোর কাজ করেছেন। এ বার ওই একই বিট অফিসের সামনে গাছ কাটার অভিযোগ উঠল। বিষয়টি নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন ডিএফও।
তবে, ডিএফও জানান, দুষ্কৃতীরা যাতে এলাকার কাঠকলগুলিতে চুরির গাছ চেরাই না করাতে পারে, তা নিশ্চিত করতে সম্প্রতি কাঠকলগুলির সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। গাছ চুরি ঠেকাতে কাঠকলগুলির মালিকদেরও সচেতন করা হয়েছে। পাশাপাশি, বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় ১৫০টি অনুমোদিত কাঠকল রয়েছে। এর বাইরে আরও কোনও কাঠকল আছে কি না, তা নিয়ে খোঁজখবর
করা হচ্ছে।
এ দিকে, জেলার ‘কোলফিল্ড টিম্বার অ্যান্ড সমিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের’ জেলা সভাপতি সঞ্জয় তিওয়ারি বলেন, “সংগঠনের কেউ যদি এই অসাধু কাজে যুক্ত থাকেন, সে দায় সংগঠনের নয়। বন দফতর আইনি পদক্ষেপ করুক। আমাদের সংগঠনে একশো জন সদস্য আছেন। প্রত্যেকের নির্দিষ্ট সরকারি অনুমতি রয়েছে। কোনও অনুমোদনহীন সদস্য আমাদের সংগঠনে নেই।”