প্রতীকী ছবি।
কর ফাঁকি দিয়ে জেলার নানা প্রান্তে ছুটছে প্রায় তিরিশ হাজার গাড়ি। ফলে, পরিবহণ দফতরের চলতি অর্থবর্ষে প্রায় ১৬ কোটি টাকা রাজস্ব বকেয়া পড়ে রয়েছে। সম্প্রতি এমনই তথ্যের কথা জানিয়েছে দফতর।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) শশাঙ্ক শেঠির উপস্থিতিতে জেলার রাজস্ব বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিষয়ে একটি বৈঠক হয়। সেখানে মোটর ভেহিক্যালস দফতরকে বকেয়া রাজস্ব দ্রুত আদায়ের নির্দেশ দেওয়া হয়। পরিবহণ দফতরের কর্তারা জানান, এর পরেই রাজস্ব ঘাটতির বিষয়টি সামনে আসে।
কিন্তু এর পরেই সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের প্রশ্ন, কী ভাবে এই রাজস্ব ‘ফাঁকি’, কেনই বা তা এত দিন তোলা যায়নি। এ বিষয়ে সদুত্তর দিতে পারেননি পরিবহণ দফতরের আধিকারিকেরা। তবে জেলা পরিবহণ আধিকারিক পুলকরঞ্জন মুন্সী বলেন, ‘‘এখন আর অতীত নিয়ে ভাবছিই না আমরা। দ্রুত বকেয়া আদায় করাটাই লক্ষ্য।’’
এই বকেয়া সংগ্রহ করতে গিয়ে বেশ কিছু পদক্ষেপ করার কথা জানিয়েছে দফতর। সাবেক বর্ধমান জেলা পরিবহণ দফতর থেকে গাড়ির মালিকদের নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর-সহ পুরনো রেকর্ড সংগ্রহ করা হচ্ছে। সেগুলি আসানসোল ও দুর্গাপুরে মহকুমা পরিবহণ দফতরে রাখা সর্বশেষ রেকর্ডের সঙ্গে মিলিয়ে দেখে কর বাকি থাকা গাড়ির মালিকদের ঠিকানায় চিঠি পাঠানো হবে। তাঁদের মোবাইলে ‘এসএমএস’ পাঠিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কর জমা করার নির্দেশ দেওয়া হবে। প্রয়োজনে কিছু টাকা ছাড় দেওয়া হতে পারে। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে কর জমা না করলে আইনি পদক্ষেপ করা হবে।
পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা যায়, দুই মহকুমার বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থায় চলা অধিকাংশ ভাড়াগাড়ির কর দেওয়া বাকি রয়েছে। বাণিজ্যিক রেজিস্ট্রেশন নেওয়া বেশ কিছু গাড়ির মালিকও কর দেননি। প্রাথমিক তদন্তে পরিবহণ আধিকারিকেরা দেখেছেন, দুই শিল্প শহরে একাধিক বন্ধ কারখানার গাড়ির করও সময়ে জমা পড়েনি। পরিবহণ আধিকারিকেরা জানান, জানুয়ারির শেষ সপ্তাহ থেকেই বকেয়া আদায়ে লাগাতার অভিযান শুরু হবে।
তা ছাড়া, দুই মহকুমায় হাজার তিনেক পুলকার চললেও সেগুলির বেশির ভাগেরই জেলা পরিবহণ দফতরের অনুমোদন নেই। ফলে, এদের করও পাচ্ছে না জেলা। কিন্তু এখানেই পুলকারগুলি ব্যবসা করছে। এই পরিস্থিতিতে সেগুলির বিরুদ্ধেও আইনি পদক্ষেপ করে কর আদায়ের কথা জানিয়েছে প্রশাসন।