বঙ্গাধিকারী পুজোয় চিনির নৈবেদ্য

খাজুরডিহির পুরোহিতপাড়ায় ছ’শতক জায়গায় দুর্গা মন্দিরের পাশেই রামসীতা মন্দির। সেখাতে নিত্যসেবা হয়। খাজুরডিহির ইতিহাস থেকে জানা যায়, মুঘল সম্রাট আকবরের আমলে রাজস্ব আদায় ও হিসেবপত্র রাখার জন্য ভগবান রায় প্রধান কানুনগো বা বঙ্গাধিকারী হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন।

Advertisement

সুচন্দ্রা দে

কাটোয়া শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৬:৩০
Share:

খাজুরডিহির দেবী প্রতিমা। নিজস্ব চিত্র

দেবীর পুজো শুরুর আগে নৈবেদ্য দেওয়া হয় গ্রামের দেবদেবীদের। তাঁরা যেন দেবী দুর্গার ভাইবোনের মতো। দেবীর মন্দিরের পাশেই বছরভর চলে রামসীতার পুজো। তিন শতক ধরে এ ভাবেই পুজো চলে আসছে কাটোয়ার খাজুরডিহির ঘোষাল পরিবারে। এই পুজো ‘বঙ্গাধিকারী’ পুজো নামেও খ্যাত।

Advertisement

খাজুরডিহির পুরোহিতপাড়ায় ছ’শতক জায়গায় দুর্গা মন্দিরের পাশেই রামসীতা মন্দির। সেখাতে নিত্যসেবা হয়। খাজুরডিহির ইতিহাস থেকে জানা যায়, মুঘল সম্রাট আকবরের আমলে রাজস্ব আদায় ও হিসেবপত্র রাখার জন্য ভগবান রায় প্রধান কানুনগো বা বঙ্গাধিকারী হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন। তিনি তাঁর কূলদেবতা হিসেবে রামসীতাকে প্রতিষ্ঠা করেন। বর্গি হামলার কারণে মুর্শিদাবাদ থেকে পালিয়ে আসা ঘোষাল পরিবারকে রামসীতা পুজোর দায়িত্ব দেন ভগবান রায়। কথিত রয়েছে, তাঁর ছেলে হরিনারায়ণ রায় ১১১৩ খ্রীষ্টাব্দে খাজুরডিহিতে দুর্গাপুজো শুরু করেন। দেবীর মৃন্ময়ী মূর্তিতে প্রথম প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেন অমোঘচন্দ্র ঘোষাল। বছর দশেক আগে পাকা মন্দির নির্মাণ হয়েছে।

ঘোষাল পরিবারের প্রবীণ সদস্য উমানন্দ ঘোষাল, রামদুলাল ঘোষাল, সন্তোষরাম ঘোষালেরা পুজোর দায়িত্বে রয়েছেন। একচালা পুজোর পৌরহিত্য করেন পরিবারের কনিষ্ঠ সদস্যেরা। পুজোর চার দিনই গ্রামীণ দেবদেবীর বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়। গ্রামের পূর্বে রক্ষাকালী, উত্তরে ভৈরবনাথ, পশ্চিমে শিবাক্ষ্যা ও দক্ষিণে বড়ঠাকরুনকে রীতি মেনে ঢাকি ও ব্রাহ্মণ গিয়ে পুজো দিয়ে আসেন। নৈবেদ্যও দেওয়া হয়।

Advertisement

বংশ পরম্পরায় মঙ্গলকোটের বনকাপাশি থেকে ঢাকিরা আসেন। নবমীতে ঘোষাল পরিবারের কোনও মেয়েকে কুমারীপুজো করা হয়। পুজোর সব দিনই দেবীকে চিনির নৈবেদ্য দেওয়া হয়। উমানন্দবাবু জানান, চৈত্রে রামনবমীতে ঘোষাল পরিবারে বড় উৎসবের আয়োজন করা হয়। সেই সময় পঙ্‌ক্তিভোজের আয়োজনও হয়। ‘বঙ্গাধিকারী’ পুজোকে কেন্দ্র করে আনন্দে মেতে ওঠেন খাজুরডিহির সমস্ত বাসিন্দা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement