উৎসব মঞ্চে খুদেরা। নিজস্ব চিত্র
সাবালক হওয়া থেকে আর এক ধাপ দূরে বর্ধমান উৎসব। আজ, শনিবার থেকে বাঁকার পাড়ে উৎসব ময়দানে বর্ধমান পুর-উৎসব শুরু হচ্ছে। এ বার উৎসবের থিম, ‘রাঢ় বাংলার পীঠস্থান, পর্যটনে বর্ধমান...’। উৎসব কমিটির সভাপতি তথা বর্ধমানের পুরপ্রধান স্বরূপ দত্ত বলেন, “এই শহরের অলিগলিতে ঐতিহ্য-ইতিহাস লুকিয়ে রয়েছে। তাকে বের করে সকলের সামনে তুলে ধরতে চাইছি। তাতে পর্যটন মানচিত্রে বর্ধমানের নাম লেখা হবে। সেই উদ্দেশ্য নিয়েই থিম করা হয়েছে।”
২০১৪ সালে বর্ধমান উৎসব পাল্টে হয় বর্ধমান পুর-উৎসবে। তবে, ২০০০ সাল থেকে টানা ১৩ বছর ‘বর্ধমান উৎসব’ নামেই মেলা-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়েছে। খাতায়-কলমে ‘বর্ধমান পুর উৎসব’ নাম থাকলেও আদতে তা বর্ধমান উৎসব নামেই পরিচিত। চলতি বছরের উৎসব চলবে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। উৎসবের উদ্বোধন করবেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। উদ্বোধনের আগে আজ, শনিবার উৎসব উপলক্ষে বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ স্বাস্থ্য-বিষয়ক একটি আলোচনা চক্রে হাজির থাকবেন চিকিৎসক সুকুমার মুখোপাধ্যায়। উদ্বোধনের সময়েও তিনি মঞ্চে থাকবেন বলে উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন।
বর্ধমান উৎসবকে ঘিরে শহরের মূল রাস্তা জিটি রোডে সাজো সাজো রব। স্টেশন থেকে পারবীরহাটা মোড় পর্যন্ত ৬৫টি বাতিস্তম্ভকে এলইডি আলোর মালা দিয়ে সাজানো হয়েছে। জিটি রোড পরিষ্কার রাখার জন্য আবর্জনা না ফেলার আবেদন জানিয়ে বোর্ড লাগিয়েছে পুরসভা। ওই রাস্তায় থাকা ভ্যাটও পুরসভা সরিয়ে নিয়েছে। শুক্রবার উৎসব ময়দানে গিয়ে দেখা গেল, স্টল তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। কিছু কিছু দোকান সাজানোর কাজ চলছে। মূল মঞ্চে কচিকাঁচা থেকে বড় কলাকুশলীরা শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিচ্ছে। পুরপ্রধান জানিয়েছেন, গত বছরের চেয়ে তিন লক্ষ টাকা বেড়ে এ বছর বাজেট হয়েছে ৩৫ লক্ষ টাকা। তার মধ্যে ১০ লক্ষ টাকা পুরসভা নিজস্ব তহবিল থেকে উৎসব কমিটিকে অনুদান দিয়েছে। ওই কমিটির সম্পাদক তথা পুরসভার চেয়ারম্যান-ইন-কাউন্সিল খোকন দাসের কথায়, “আমরা পুরসভায় আসার পরেই উৎসবের জন্য আলাদা কমিটি গঠন করি। তারাই আর্থিক দিক-সহ উৎসবের খুঁটিনাটি বিষয় সামলায়। গত দু’বছরে মেলা থেকে আমাদের ২২ লক্ষ টাকা আয় হয়েছে।”
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, কার্জন গেট-সর্বমঙ্গলা মন্দির-পীরবহরাম সহ শহরের ৮-১০টি ঐতিহ্যবাহী জায়গা চিহ্নিত করে উৎসবের মাঠে বিশেষ প্যাভিলিয়ন তৈরি হবে। সেখানে চিত্র প্রদর্শনী ছাড়াও স্কুল পড়ুয়াদের তৈরি হেরিটেজ-মডেল ও ভিডিও দেখানো হবে। পর্যটনের উপরে তৈরি স্মরণিকা আজ, শনিবার প্রকাশ করা হবে। এ বছর উৎসবের জন্য শহরের শিল্পীদের দিয়ে ‘থিম সং’ তৈরি করা হয়েছে। উৎসবের ৯ দিন বর্ধমানের প্রায় ২৫০০ শিল্পী অনুষ্ঠান করবেন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এ বছরের আকর্ষণ শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায়, শুভমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়, লোপামুদ্রা মিত্রদের মতো শিল্পীদের গান। চেয়ারম্যান-ইন-কাউন্সিল (আলো) সাহাবুদ্দিন খান বলেন, “শহরের ঐতিহ্যমণ্ডিত নিদর্শনগুলি আলো দিয়ে সাজানোরও চেষ্টা চলছে।”