এখানেই ‘অবৈধ’ ভাবে বসবাস করার অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র।
রাষ্ট্রায়ত্ত কয়লা উত্তোলক সংস্থা ইসিএল সোদপুর এরিয়ার চিনাকুড়ি তিন নম্বর কোলিয়ারির আধুনিকীকরণের জন্য দখলদার উচ্ছেদের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। শনিবার জমি খালি করার শেষ দিন। ‘দখলদারেরা’ নিজে থেকে না উঠলে আইনি পদক্ষেপ করা হবে বলেও জানিয়েছে কোলিয়ারি। এ দিকে, বাসিন্দাদের দাবি, দিতে হবে পুনর্বাসন।
সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে চিনাকুড়ি তিন নম্বর খনিতে প্রায় ৩৬ হাজার টন উন্নত মানের কয়লা মজুত রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে ওই খনিতে পুরনো পদ্ধতিতে দিনে দু’শো টনের বেশি কয়লা উত্তোলন করা যায় না। এর জেরে বহু বছর ধরে খনিটি লোকসানে চলছে। এই পরিস্থিতিতে ৮০০ কোটি টাকা খরচে আধুনিকীকরণ ও ‘কন্টিনিউয়াস মাইনিং’ পদ্ধতি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান সোদপুর এরিয়ার এজেন্ট অজিত কুমার।
কী এই ‘কন্টিনিউয়াস মাইনিং’? খনি-কর্তারা জানান, ভূগর্ভে সঞ্চিত কয়লা কাটা, খনির উপরে কয়লা তোলা এবং ভূগর্ভের উপরি ভাগ ধরে রাখতে খুঁটি পোঁতা— গোটা কাজটিই অত্যাধুনিক যন্ত্রের সাহায্যে করা হয় এই পদ্ধতিতে। অজিতবাবুর দাবি, ‘‘কন্টিনিউয়াস মাইনিং পদ্ধতি অবলম্বন করে খনিটি থেকে প্রতি দিন প্রায় ১,৫০০ টন কয়লা উত্তোলন সম্ভব হবে। খনিটিও লাভজনক হবে।’’
কিন্তু কোলিয়ারি সূত্রে জানা গিয়েছে, সব ব্যবস্থা পাকা হয়ে গেলেও, লাগোয়া সংস্থার জমিতে ‘দখলদার-সমস্যা’ দেখা গিয়েছে। অজিতবাবু বলেন, ‘‘আধুনিকীকরণের কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি বোঝাই গাড়ি ও কাজ শুরু হওয়ার পরে, কয়লা বোঝাই ডাম্পার যে এলাকা দিয়ে যাবে, সেখানে অবৈধ ভাবে বহু পাকা নির্মাণ তৈরি করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে আট মিটার চওড়া একটি রাস্তা তৈরি করতে হবে। না হলে আধুনিকীকরণের কাজ এগোবে না।’’
এই পরিস্থিতিতে গত ১৬ জুলাই উচ্ছেদের বিজ্ঞপ্তি দেয় ইসিএল। তবে এলাকাবাসীর একাংশ জানিয়েছেন, তাঁরা প্রায় তিন দশক ধরে এখানে রয়েছেন। তাই উচ্ছেদের আগে দেওয়া হোক পুনর্বাসন। স্থানীয় বাসিন্দা রামকুমার প্রসাদ বলেন, ‘‘বর্ষায় পরিবার নিয়ে কোথায় গিয়ে দাঁড়াব জানি না। খনি কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা পুনর্বাসন দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি।’’ যদিও পুনর্বাসন দেওয়ার কোনও সম্ভাবনাই নেই বলে দাবি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কোলিয়ারি কর্তৃপক্ষের। পাশাপাশি, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বাসিন্দা এ-ও দাবি করেন, খনিতে কর্মরত বেশ কয়েকজন বর্তমান শ্রমিক ওই জমি দখল করে বাড়ি তৈরি করেছেন। ওই শ্রমিকদের চিহ্নিত করে জমি খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। না হলে বিভাগীয় পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছেন কোলিয়ারি কর্তৃপক্ষ।