কাঁকসার টোম্যাটো খেতে। নিজস্ব চিত্র
টোম্যাটোর দেদার ফলন হয়েছে কাঁকসায়। মোটামুটি দাম পাচ্ছেন চাষিরা। তবে ফলন বেশি হওয়ায় নষ্টও হচ্ছে বহু। ফলে, আখেরে ক্ষতি হচ্ছে চাষিদের। এই পরিস্থিতিতে টোম্যাটো প্রক্রিয়াকরণের দাবি জানিয়েছেন কাঁকসার চাষিরা।
কাঁকসা ব্লকে অজয় ও দামোদরের পাড়ে বিভিন্ন গ্রামের চাষিরা টোম্যাটো চাষ করেছেন। বিদবিহার পঞ্চায়েতের শিবপুর, অজয়পল্লি, বাসুদেবপুর, বনকাটি পঞ্চায়েতের বসুধা, ডাঙাল, সাতকাহনিয়া, আমলাজোড়া পঞ্চায়েতের মানিকারা, আমলাজোড়া, সিলামপুর, মোবারকগঞ্জ প্রভৃতি জায়গার চাষিরা টোম্যাটো লাগিয়েছেন জমিতে। চাষিরা জানান, আনাজের মধ্যে এ বার সবাই বেশি করে টোম্যাটো চাষ করেছেন। এ পর্যন্ত টোম্যাটোর কেজি প্রতি ১৮-১৯ টাকা দর পাচ্ছেন তাঁরা।
কিন্তু সময়ে বিক্রি না হওয়ায় বা বাজারে পৌঁছতে না পারায় প্রচুর টোম্যাটো নষ্ট হচ্ছে। স্থানীয় চাষি অরুণ দাস বলেন, ‘‘বাজারে টোম্যাটো পৌঁছে দিতে পারলে ভাল দাম মেলে। কিন্তু অনেকেই তা পারেন না। খেত থেকে কম দামে কিনে নিয়ে যান ব্যবসায়ীরা। তার উপরে টোম্যাটো নষ্ট হলে সমস্যায় পড়বেন চাষিরা।’’
এলাকায় আনাজ সংরক্ষণের উপযোগী বহুমুখী হিমঘর না থাকায় অতিরিক্ত টোম্যাটো সংরক্ষণ করা যাচ্ছে না। তাই সেই সব টোম্যাটো প্রক্রিয়াকরণ করা গেলে অনেক বেশি লাভ হত বলে দাবি চাষিদের। টোম্যাটো চাষি ঊষা বালা বলেন, ‘‘কাঁকসায় টম্যাটো সংরক্ষণের কোনও ব্যবস্থা নেই। অথচ, ক্ষতি থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় প্রক্রিয়াকরণ। কিন্তু আমাদের তেমন প্রশিক্ষণ বা পরিকাঠামো, কিছুই নেই।’’ চাহিদার তুলনায় জোগান বেশি হওয়ায় টোম্যাটোর বেশি দাম পাচ্ছেন না চাষিরা। টম্যাটো নষ্ট হওয়া আটকাতে না পারলে লোকসান হবে তাঁদের।
সাধারণত নভেম্বর থেকে মার্চ হল টোম্যাটো চাষের মরসুম। এ বার ভাল ঠান্ডা ও উপযোগী আবহাওয়া থাকায় ফলন বেশি হয়েছে। এখনও ঠান্ডা থাকায় টম্যাটো পাকতে দেরি হচ্ছে। কিন্তু দিনে রোদের তেজ বাড়ছে। ফলে, জমিতে এখনও থাকা টোম্যাটো কত দিন আর খাওয়া যাবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন চাষিরা। গলসির বিধায়ক অলোককুমার মাঝির বক্তব্য, ‘‘সত্যিই চাষিরা সমস্যায় রয়েছেন। টোম্যাটো থেকে সস তৈরি করে বিক্রির ব্যবস্থা করলে সমস্যা মেটে।’’ কাঁকসা কিসান মান্ডিতে চাষি পরিবারের মহিলাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে টোম্যাটো সস তৈরির ব্যবস্থা করার বিষয়ে উদ্যোগী হবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন বিধায়ক।