মাটির নীচে চলছে কয়লা খনন। উপরে ধু-ধু ফাঁকা জমি। সেই জমিতে বৃক্ষরোপণে উদ্যোগী হয়েছিল ব্লক প্রশাসন। লিখিত অনুমোদন না মিললেও ইসিএলের সবুজ সঙ্কেত পেয়ে দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের প্রায় ২০ হেক্টর জমিতে ফলের গাছ লাগিয়েছে ব্লক প্রশাসন। বিডিও শুভ সিংহরায় জানান, উদ্যানপালন দফতর চারা দিয়েছে। একশো দিনের প্রকল্পে পরিচর্যার কাজ চলছে।
দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের বিভিন্ন ফাঁকা জায়গায় গত কয়েক বছর ধরেই বনসৃজনের উদ্যোগ চলছে। বন দফতরের হিসেবে, আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে অরণ্যের পরিমাণ এখন মাত্র ১৮ শতাংশ। অথচ, তা হওয়ার কথা ৩৩ শতাংশ। দুর্গাপুর শহরে বিভিন্ন কল-কারখানা ও টাউনশিপ গড়ার সময়ে হাজার-হাজার পুরনো গাছ কাটা পড়ে। এখনও বেআইনি ভাবে গাছ কাটার ঘটনা লেগে রয়েছে বলে অভিযোগ। তা সত্ত্বেও এখনও গাছের পরিমাণ শহরে তুলনামূলক ভাবে বেশি। কিন্তু শহর ছাড়িয়ে খনি অঞ্চলে ঢুকলেই সবুজের পরিমাণ বেশ কম।
দুর্গাপুরের বন দফতর এ বার অরণ্য সপ্তাহ অনুষ্ঠানের সূচনা করেছিল দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের মাধাইগঞ্জে। ইতিমধ্যে সেখানকার ১০ হেক্টর জমিতে যেমন শাল, মহুয়া, সেগুনের মতো নানা গাছ লাগানো হয়েছে। আমলকি, হরিতকির মতো ভেষজ গাছও লাগানো হয়েছে। গবাদি পশুর হাত থেকে গাছ বাঁচাতে চার পাশ শালের খুঁটি ও তারকাঁটা দিয়ে ঘেরা হয়েছে। গাছের উচ্চতা ইতিমধ্যে ফুট দুয়েক ছাড়িয়েছে।
এই ব্লকের বড় অংশে ভূগর্ভে ইসিএলের কয়লা খনির কাজ চলছে। নিয়ম অনুযায়ী, উপরের জমির মালিকানাও ইসিএলের। সেই জমি বছরের পর বছর ফাঁকা পড়েছিল। সম্প্রতি ব্লক প্রশাসন সেখানেও গাছ লাগানোর পরিকল্পনা নেয়। ইসিএল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকের পরে ঠিক হয়, ব্লক প্রশাসন সেই জমিতে গাছ লাগাতে পারে। প্রায় ২০ হেক্টর তেমন জমিতে ফলের গাছ লাগানো হয়েছে। বিডিও জানান, আম, কাঁঠাল, লেবু, মুসাম্বি, আপেল, কুল ইত্যাদি ফলের গাছ লাগানো হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘ইসিএলের সম্মতি নিয়েই আমরা ওই জমিতে বনসৃজন করেছি।’’
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গোগলা পঞ্চায়েতের বেশ কিছু এলাকা এবং শিরষা থেকে বালিজুড়ি পর্যন্ত রাস্তার পাশে একাধিক জায়গায় গাছ লাগানো হয়েছে। উদ্যানপালন দফতর গাছের চারা সরবরাহ করেছে। গাছ লাগানো হয়েছে একশো দিনের প্রকল্পে। পরিচর্যা করছেন স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর সদস্যেরা। সবুজায়নের ফলে যেমন দূষণ রোধ হবে, স্থানীয় বাসিন্দারাও তেমন উপকৃত হবেন বলে মনে করছে প্রশাসন।