এই কর্মসূচি ঘিরে দ্বন্দ্ব কুলটিতে। নিজস্ব চিত্র
দিন দশেক আগেই দলীয় নেতৃত্বের প্রতি বঞ্চনার অভিযোগ তুলে, প্রকাশ্যে সম্মেলন করে ‘ক্ষোভপ্রকাশ’ করেছিলেন কুলটি তৃণমূলের একাংশ সদস্য-সমর্থক। বুধবার ফের ওই সদস্যদেরই বিরুদ্ধে ‘অনুমোদন’ না নিয়ে দলের পতাকা ব্যবহার করে কর্মসূচি পালন করার অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূলের ব্লক ও জেলা নেতৃত্ব। এই ঘটনায় ফের কুলটি তৃণমূলের গোষ্ঠী বিবাদ প্রকাশ্যে এল বলে দাবি বিরোধীদের।
সাবেক কুলটি পুরসভার প্রাক্তন উপপ্রধান, তৃণমূলের প্রবীণ নেতা বাচ্চু রায়ের নেতৃত্বে বুধবার এক দল দলীয় সদস্য-সমর্থক দলীয় পতাকা হাতে কর্মসূচি পালন করেন। তাঁদের অভিযোগ, কুলটির বিজেপি বিধায়ক অজয় পোদ্দারকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। নিজের বিধানসভা এলাকায় কোনও রকম নাগরিক চাহিদা ও পরিষেবা তিনি দিতে পারছেন না। বাচ্চুর দাবি, “বিধায়কের দেখা না পেয়ে সাধারণ মানুষ আমাদের দ্বারস্থ হচ্ছেন। সাধ্যমতো পরিষেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করছে তৃণমূল।” ভবিষ্যতে যেন কুলটির বাসিন্দারা আর এমন বিধায়ককে নির্বাচিত না করেন, সে কথা বোঝাতেই তাঁরা প্রচারে নেমেছেন বলে দাবি বাচ্চুর।
এ দিকে, বাচ্চুর নেতৃত্বে এই কর্মসূচি পালনের পরেই দলের অন্দরে বিতর্ক শুরু হয়েছে। কারণ, গত কয়েকদিন আগে দলের জেলা কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ব্লক স্তরে কোনও কর্মসূচি পালিত হলে, তা প্রথমে জেলা কমিটি থেকে অনুমোদন করাতে হবে। তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “এই কর্মসূচি নিয়ে আমার কাছে কোনও খবর নেই। জেলাও অনুমোদন দেয়নি।” বিষয়টি ব্লক নেতৃত্বের কাছে জানতে চাইবেন বলে জানিয়েছেন। ব্লক সভাপতি কাঞ্চন রায় বলেন, “যাঁরা এই কর্মসূচি পালন করেছেন, তাঁরা দলের অনুমোদন নেননি। আমাকেও কিছু জানাননি। বিষয়টি জেলা নেতৃত্বকে জানাব।” অনুমোদন যে নেওয়া হয়নি, তা স্বীকার করে নিয়েছেন বাচ্চু। তিনি বলেন, “আমরা দলের হয়েই কর্মসূচি পালন করেছি। কোনও অন্যায় করিনি।”
এ দিনের কর্মসূচি প্রসঙ্গে বিধায়ক অজয় পোদ্দারের টিপ্পনী, “যাঁরা এই কর্মসূচি পালন করেছেন, তাঁরা দলে জায়গা পাচ্ছেন না। তাই সস্তা রাজনীতিতে টিকে থাকতে না জেনে বুঝে এমন কর্মসূচি পালন করেছেন।” অজয়ের দাবি, কুলটি তৃণমূল গোষ্ঠী বিবাদে জর্জরিত। এ দিনের কর্মসূচি সেই ছবিটাই স্পষ্ট করেছে।