আহত দু’জন। নিজস্ব চিত্র
পঞ্চায়েতের দরপত্র প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মারামারিতে অশান্তি ছড়াল মন্তেশ্বরের শুশুনিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে। উঠেছে গুলি চলার অভিযোগও। শুক্রবারের ওই ঘটনায় আহত হয়েছেন উভয় পক্ষের ১২ জন কর্মী। নাসিরউদ্দিন খান, সিফু খান, জেহের আলি-সহ গুরুতর আহত ছ’জনকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিরা মন্তেশ্বর কাদম্বিনী ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসাধীন।
শুশুনিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘এ দিন প্রায় ৪৩ লক্ষ টাকার দরপত্র খোলার কথা ছিল। কিন্তু প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগেই পঞ্চায়েতের বাইরে অশান্তির জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে কাজ।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বেলা ২টো নাগাদ শুশুনিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত চত্বরে দরপত্র নিয়ে পানবরেয়া ও তুল্লা গ্রামের তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি বাধে। খবর ছড়িয়ে পড়তেই দুই গ্রাম থেকে প্রচুর লোকজন জড়ো হয়ে যান পঞ্চায়েত। শুরু হয় ইট বৃষ্টি, লাঠালাঠি। দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয় মন্তেশ্বর থানার পুলিশ। আহত ১২ জনকে নিয়ে যাওয়া হয় মন্তেশ্বর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র।
মন্তেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ তথা শুশুনিয়া অঞ্চলের বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতার অজয় রায়ের অভিযোগ, ‘‘পানবরেয়া গ্রামের যুব তৃণমূল নেতা তন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলবল এই কাণ্ড ঘটিয়েছে।’’ তাঁর দাবি, প্রতিটি ক্ষেত্রেই ওই গোষ্ঠীর লোকজন পঞ্চায়েতের উন্নয়নে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ দিন ব্যাঙ্কে টাকা তুলতে আসা মানুষজনকেও মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। পাল্টা তন্ময়বাবুর দাবি, পঞ্চায়েত সদস্যদের গুরুত্ব না দিয়ে গায়ের জোর খাটিয়ে পঞ্চায়েতের কর্মকর্তারা কিছু দালালদের সহযোগিতায় নিজেদের খুশি মতো দরপত্র ডাকছেন। সাধারণ মানুষ প্রতিবাদ করতে গেলে তাঁদের ওপর গ্রাম থেকে দলবল নিয়ে এসে চড়াও হচ্ছেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘তুল্লা গ্রামের বেশ কিছু যুবক পঞ্চায়েত চত্বরে রিভলভার নিয়ে এসে হুমকি দেয় এবং শূন্যে এক রাউন্ড গুলি চালায়।’’ যদিও গুলি চালানোর অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছে অপর পক্ষ।
মন্তেশ্বর ব্লক তৃণমূল সভাপতি আজিজুল শেখ বলেন, ‘‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কোনও ভাবেই বরদাস্ত করবে না। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখে দল প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবে।’’ এ দিন হাসপাতাল চত্বরে আহতদের সঙ্গে দেখা করেন মন্তেশ্বরের বিধায়ক সৈকত পাঁজা। তিনি জানান, আহতদের দু’তিন জন তাঁর পরিচিত। সমস্ত ঘটনা দলের উপরমহলে জানানো হবে। পুলিশেরও দাবি, পঞ্চায়েত চত্বরের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কয়েক জনকে আটকও করে মন্তেশ্বর থানার পুলিশ।