প্রতীকী ছবি।
জেলার বিভিন্ন ব্লক ও শহরে সভাপতি বদলের পর থেকেই তৃণমূলের অন্দরে নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে। প্রতিদিনই জেলার বিভিন্ন প্রান্তে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে অশান্তি, সংঘর্ষের অভিযোগ উঠছে। পঞ্চায়েত ভোট এগিয়ে আসার সঙ্গে এমন ‘দ্বন্দ্ব’ দলের মাথাব্যথা হয়ে উঠবে বলে কর্মীদের একাংশ ধারণা। এই পরিস্থিতিতে, আজ, বুধবার কাটোয়া শহরে জরুরি ভিত্তিতে বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধি ও দলের বিভিন্ন শাখার নেতানেত্রীদের বৈঠকে ডেকেছেন জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। কী কারণে এই বৈঠক, তা নিয়ে জেলা সভাপতি বা দলের কেউই মুখ খুলতে চাননি।
তৃণমূলের একাংশের দাবি, প্রতিটি ব্লকে যে ভাবে ‘দ্বন্দ্ব’ দেখা দিচ্ছে, তা নিয়ে দলীয় নেতৃত্ব বিব্রত। এই সভা থেকে ‘মিলেমিশে’ কাজ করার বার্তা দিতে পারে দল। সেখানে ভোটকুশলী সংস্থার পূর্ব বর্ধমানের দায়িত্বপ্রাপ্তেরা হাজির থাকবেন বলেও খবর। তৃণমূলের পঞ্চায়েত স্তরের জনপ্রতিনিধিদের একাংশের দাবি, ১০০ দিনের কাজ-সহ নানা প্রকল্পে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে, সেগুলি মুখ থুবড়ে পড়েছে। আবাস যোজনা, রাস্তার কাজ, নিকাশির মতো গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবায় বিঘ্ন ঘটছে। মানুষের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই ক্ষোভ সামাল দেওয়া যাবে কী ভাবে, সে নিয়েও বার্তা দিতে পারে দল। আবার, পঞ্চম পর্যায়ে ‘দুয়ারে সরকার’ শিবির শুরু হয়েছে। প্রথম দু’দিন শিবিরে ভিড় আশাজনক নয়, অথচ পঞ্চায়েত ভোটের আগে বিদ্যুতে বিলের ছাড়-সহ নানা সুবিধা ওই শিবির থেকে পাওয়ার কথা। সে নিয়েও আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে। পঞ্চায়েত পরিচালনায় সরকার একাধিক নতুন নিয়ম চালু করেছে, বিশেষ করে দরপত্রের ক্ষেত্রে। সে নিয়ে পঞ্চায়েত স্তরে সদস্য-ঠিকাদারদের মধ্যে ‘দ্বন্দ্ব’ দেখা দিচ্ছে বলে অভিযোগ।
জেলা তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশের দাবি, সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। কী ভাবে ভোটের প্রস্তুতি নিতে হবে, তার দিশা দল ও ভোটকুশলী সংস্থা দিতে পারে। তবে দলের কাছে এই মূহুর্তে ‘মাথাব্যথা’ বিভিন্ন ব্লকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। এমনকী, মহিলা তৃণমূলের ‘চলো গ্রামে যাই’ কর্মসূচিতেও দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। বোহার ২ পঞ্চায়েতে বুধবার ওই কর্মসূচিতে গিয়ে দলেরই কিছু কর্মীর কাছে মেমারি ২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি হরিসাধন ঘোষ হেনস্থা হয়েছেন বলে অভিযোগ। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এই ঘটনা, মেনে নিয়েছেন ব্লকের মহিলা সভাপতি রাজলক্ষ্মী হাট্টি।
ওই ব্লকে নতুন সভাপতি ঘোষণার পর থেকেই অশান্তি চলছে। মন্তেশ্বরের বিধায়ক, রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী এক ভিডিয়ো-বার্তায় তাঁর পছন্দের নেতাকে ব্লক সভাপতি করা হয়নি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। জামালপুরে আবার ব্লক সভাপতি পাল্টানোর দাবিতে পথ অবরোধ হয়। গলসিতে কয়েক দিন ধরে শাসক দলের ‘কোন্দলে’ সংঘর্ষ চলছে। একই ধরনের পরিস্থিতি রয়েছে রায়না ২, মেমারি শহর, কালনা ২, বর্ধমান ২ ব্লকেও। এই পরিস্থিতিতে আজ, বৃহস্পতিবারের বৈঠকে কীবার্তা মেলে, তাকিয়ে রয়েছে তৃণমূলের নিচুতলা।