ভোট ঘোষণার পরেও পরিস্থিতি পাল্টাল না। তৃণমূলের নির্বাচনী প্রচারে কার্যত বাইরেই রয়ে গেলেন তৃণমূলের দেড় দশকের কাউন্সিলর বিশ্বনাথ পাড়িয়াল। আর এর ফলে দুর্গাপুর পশ্চিম কেন্দ্রে নির্বাচনের আগে ফের তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে এল রবিবার।
প্রায় দু’দশক ধরে দুর্গাপুর পুরসভার কাউন্সিলর হিসেবে রয়েছেন বিশ্বনাথ পাড়িয়াল। প্রথম পাঁচ বছর কংগ্রেসের। শেষ দেড় দশক তৃণমূলের। কংগ্রেসের হয়ে পাঁচ বছর এবং তৃণমূলের হয়ে দশ বছর পুরসভার ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন। ২০১২ সাল থেকে তিনি ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। তাঁর নিজের ওয়ার্ড এবং পুরনো ওয়ার্ড, দু’জায়গাতেই বিদায়ী বিধায়ক অপূর্ব মুখোপাধ্যায়ের ওয়ার্ড ভিত্তিক নির্বাচনী বৈঠকে তিনি ডাক পাননি। সে জন্য ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন বিশ্বনাথবাবু।
নির্বাচন ঘোষণার পরে রবিবার সন্ধ্যায় ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে দুর্গাপুরের ৩ নম্বর যুব তৃণমূলের পক্ষ থেকে নির্বাচনী সভার আয়োজন করা হয়েছিল। হাজির ছিলেন প্রার্থী অপূর্ব মুখোপাধ্যায়। কিন্তু গরহাজির রয়ে যান বিশ্বনাথবাবু ও তাঁর অনুগামীরা।
বিশ্বনাথবাবু ১৯৯৭ সালে কংগ্রেসের হয়ে ৩০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে লড়ে কাউন্সিলর হন। ২০০১ সালে যোগ দেন তৃণমূলে। পরের বছর তিনি হারান সিপিএম প্রাথী দেবব্রত সাঁইকে। ২০০৭ সালেও তিনি ওই ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর হন। সেই সময় দুর্গাপুরে সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তৃণমূলের অন্যতম প্রধান মুখ ছিলেন বিশ্বনাথবাবু। ২০১২ সালে ৩০ নম্বর ওয়ার্ড সংরক্ষিত হয়ে যাওয়ায় ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে তিনি প্রার্থী হন। সে বার স্থানীয় নেতৃত্ব তাঁকে আর প্রার্থী করা হবে না বলে ঘোষণা করলেও বিশ্বনাথবাবু শেষ মুহূর্তে দলের রাজ্যস্তরের তিন নেতাকে ধরে টিকিট জোগাড় করেন। সিপিএমকে হারিয়ে জয়ী হন তিনি। রবিবার রাতে ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কড়ঙ্গপাড়া সংলগ্ন ময়দানে আয়োজিত নির্বাচনী সভাতে কিন্তু তিনি ডাকই পাননি বলে জানান বিশ্বনাথবাবু।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সভা আয়োজনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন তৃণমূলের রাজ্য আইনজীবী সেলের নেতা দেবব্রত সাঁই। সিপিএম প্রার্থী দেবব্রতবাবুকে এক সময়ে হারিয়ে কাউন্সিলর হয়েছিলেন বিশ্বনাথবাবু। পরে দেবব্রতবাবু তৃণমূলে যোগ দেন। এ ভাবে তাঁকে দূরে রাখায় ক্ষুব্ধ বিশ্বনাথবাবু বলেন, ‘‘সিপিএম থেকে আসা কিছু লোক এখন সামনের সারিতে রয়েছেন। আসল তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা এ সব দেখে স্তম্ভিত হয়ে যাচ্ছেন। মানুষ সব দেখছেন।’’ দেবব্রতবাবু কোনও মন্তব্য করতে চাননি। যোগাযোগ করা যায়নি অপূর্ববাবুর সঙ্গে। তবে দলের ৩ নম্বর ব্লক সভাপতি সুনীল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দলের কোনও কাজে বিশ্বনাথ থাকেন না। তাই তাঁকে ডাকার প্রয়োজন দল মনে করেনি। ইচ্ছে থাকলে তো তিনিই নিজেই আসতে পারেন।’’