ভাঙচুর, বিক্ষোভে তপ্ত শহর

হামলা তৃণমূল অফিসে, পাল্টা হামলার নালিশ বিজেপির

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই দিন সন্ধ্যায় বিজেপির বিজয় মিছিল বেরোয় দুর্গাপুরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৯ ০৩:২২
Share:

দুর্গাপুরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের অফিসে ভাঙচুরের চিহ্ন। নিজস্ব চিত্র

হামলা-পাল্টা হামলার অভিযোগে সোমবার সন্ধ্যা থেকে তেতে উঠল দুর্গাপুরের ৮ নম্বর ওয়ার্ড। সোমবার সন্ধ্যায় বিজেপির মিছিল থেকে তৃণমূলের অফিসে ভাঙচুর, রাতে পাল্টা বিজেপির কার্যালয়ে হামলার অভিযোগ ওঠে। মঙ্গলবার সকালে ফাঁড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। বিকেলে শহরে প্রতিবাদ মিছিল করে তৃণমূল।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই দিন সন্ধ্যায় বিজেপির বিজয় মিছিল বেরোয় দুর্গাপুরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে। হস্টেল অ্যাভিনিউ এলাকায় মিছিল পৌঁছতেই অশান্তি বেধে যায়। তৃণমূলের অভিযোগ, বিজয় মিছিল থেকে দলের অফিস লক্ষ্য করে ইট ছোড়া হয়। সে নিয়ে বচসা বেধে যায়। তার পরেই কয়েকজন কার্যালয়ে ঢুকে ভাঙচুর শুরু করে দেয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। আসেন তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়, পুরসভার চেয়ারম্যান মৃগেন্দ্রনাথ পাল, কাউন্সিলর দেবব্রত সাঁই-সহ দলের নেতারা।

সে দিন বিকেলে দুর্গাপুরে দলের কাউন্সিলর ও নেতাদের নিয়ে বৈঠক করতে এসেছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারি। সন্ধ্যায় আসানসোলে ফেরার সময়ে কার্যালয়ে হামলার খবর পেয়ে ফিরে আসেন তিনিও। অভিযোগ, ঘটনাস্থলে এসে পুলিশকে তিনি হুঁশিয়ারি দিতে থাকেন। পুলিশ অবিলম্বে পদক্ষেপ না করলে তাঁরাই ‘ব্যবস্থা’ নেবেন, এমন হুমকিও দেন বলে অভিযোগ। জিতেন্দ্রবাবু বলেন, ‘‘ভোটে বিজেপি জিতেছে ঠিক আছে। কিন্তু তৃণমূলের পার্টি অফিস ভাঙার অধিকার কে দিয়েছে ওদের? বিজেপি নেতারা দলের কর্মীদের সংযত করছেন না। এর ফল ওদের ভুগতে হবে। আমরা চাই দুর্গাপুর শান্ত থাকুক। কিন্তু কেউ অশান্তি পাকালে আমরাও বসে থাকব না।’’

Advertisement

ফাঁড়ির সামনে বিক্ষোভ বিজেপি কর্মীদের। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

বিজেপির অভিযোগ, এর পরেই রাতে দলের স্থানীয় একটি কার্যালয় ও ক্লাবে ভাঙচুর চালানো হয়। বিজয় মিছিল থেকে তৃণমূল অফিসে হামলার অভিযোগও উড়িয়ে দিয়েছেন বিজেপি নেতারা। দলের জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের পাল্টা দাবি, ‘‘পুলিশের অনুমতি নিয়ে সন্ধ্যায় বিজয় মিছিল বেরিয়েছিল। শেষবেলায় বিক্ষুব্ধ কিছু তৃণমূল কর্মী মিছিলে ঢুকে তৃণমূলের অফিসে ইট ছোড়ে। অশান্তি থামাতে গিয়ে আমাদের কয়েকজন কর্মী জখম হন।’’

ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকালে বিজেপি নেতা-কর্মীরা মিছিল করে গিয়ে এ-জোন ফাঁড়ি ঘেরাও করেন। লক্ষ্মণবাবুর অভিযোগ, ‘‘রাতে আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারির নেতৃত্বে দুষ্কৃতীরা ট্রাঙ্ক রোড এলাকায় বোমা ছোড়ে, আমাদের কর্মী-সমর্থকদের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে হুমকিও দেওয়া হয়েছে। দুষ্কৃতীদের হাত থেকে মহিলারাও রেহাই পাননি।’’ তাঁর পাল্টা হুঁশিয়ারি, ‘‘উনি (জিতেন্দ্রবাবু) দুর্গাপুরে পুরভোটে সন্ত্রাস তৈরি করেছেন। পঞ্চায়েত ভোটে আমার উপরে আক্রমণ হয়েছে। দুর্গাপুরকে ফের অশান্ত করতে এলে এ বার ছাড়ব না।’’ পুলিশের কাছে জিতেন্দ্রবাবুর নামে অভিযোগ জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

দলের কার্যালয়ে হামলার প্রতিবাদে এ দিন বিকেলে মিছিল করে তৃণমূলও। ছিলেন দলের নেতা উত্তমবাবু, মৃগেন্দ্রনাথবাবু, মেয়র পারিষদ অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়েরা। বিজেপি কার্যালয়ে হামলা বা কর্মীদের হুমকির অভিযোগ মানতে চাননি তাঁরা।

পুলিশ জানায়, অশান্তি এড়াতে এলাকায় নজরদারি চলছে। দু’পক্ষের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement