বর্তমানে এমনই হাল উদ্যানের। —নিজস্ব চিত্র।
সাধ করে পঞ্চায়েত উদ্যানটির নাম রেখেছিল ‘টাইগার হিল’! কিন্তু সময় গড়াতেই উদ্যানের অনেক গাছই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। অভিযোগ, প্রায় পুরো উদ্যানটিই রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বেহাল। এমনই হাল রানিগঞ্জের আমরাসোঁতা পঞ্চায়েত এলাকায় থাকা ওই টাইগার হিলের।
রানিগঞ্জ ব্লক প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে আমরাসোঁতা পঞ্চায়েত ২০০৩-এ বাঁশড়া গ্রাম লাগোয়া ফাঁকা ২৪ একর খাস জমিতে সাত হাজার আমগাছের বাগান তৈরি করে। ২০১৩-১৪ অর্থবর্ষে গ্রিন হাউস তৈরি করা হয়। সে সময়েই উদ্যানটির নাম দেওয়া হয় টাইগার হিল। গ্রিন হাউসে নানা ধরনের আনাজ, ড্রাগনফ্রুট ও বিভিন্ন ফুলগাছের চারা পুঁতে তা বড় করার পরে সে সব বাইরে লাগানো হত। এ ছাড়া গ্রিন হাউসের বাইরে আহির, হলুদ চাষ করা হত। ব্লক প্রাণিসম্পদ দফতর মুরগি ও মৎস্য উন্নয়ন দফতর উদ্যানের ভিতরে জলাশয়ে মাছ চাষ করার জন্য মাছের চারা দিয়েছিল। ব্যবস্থা হয়েছিল সৌরবিদ্যুতেরও।
স্থানীয় বাসিন্দা শরৎ কোড়া, নুনা কোড়ারা জানান, তাঁরা প্রথম থেকেই উদ্যানটি দেখভালের কাজ করছেন। তাঁদের সূত্রেই জানা গেল, লাগোয়া এলাকায় বছর ছয়েক আগে ইসিএল খোলামুখ খনি চালু করায় উদ্যানের জলাশয়ের জল শুকিয়ে গিয়েছে। তাতে উদ্যানে চাষাবাদে জলের সঙ্কট দেখা দেয়। পঞ্চায়েত বা ব্লক প্রশাসন জলের বিকল্প ব্যবস্থা করেনি। তা ছাড়া, উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে গ্রিন হাউস প্রায় অস্তিত্বহীন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক মাস আগে খোলামুখ খনি থেকে ধোঁয়া ও আগুন নির্গত হয়। তার জেরে প্রায় সাতশো আম গাছ পুড়ে যায়।
বর্তমানে হাজার পাঁচেক আম গাছ আছে। সেই বাগান শরতেরাই সাফাই করেন। বিনিময়ে আম বিক্রি করেন। তাঁদের আর্জি, “পঞ্চায়েত ও ব্লক প্রশাসন উদ্যানটির পরিচর্যায় জোর দিলে আমরা উপকৃত হব। পর্যটনকেন্দ্র হিসেবেও উদ্যানটি জনপ্রিয় হতে পারে। তা হলে, আখেরে এলাকারই আর্থিক উন্নতি হবে।”
সিপিএম পরিচালিত আমরাসোঁতা পঞ্চায়েতের প্রধান সঞ্জয় হেমব্রম জানান, উদ্যানটিকে অতীতের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে বিডিও (রানিগঞ্জ) অভীক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন করা হবে। বিডিও অভীক বলেন, “বিষয়টি খতিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।”