সর্বমঙ্গলা মন্দির। —নিজস্ব চিত্র।
ট্রাস্টি বোর্ডের ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে তিন জন ‘স্পেশ্যাল অফিসার’ নিয়োগ করে তাঁদের হাতেই সর্বমঙ্গলা মন্দিরের দায়িত্ব কার্যত তুলে দিল বর্ধমান জেলা আদালত। ওই অফিসারেরা কী কাজ করবেন, জেলা বিচারক পবনকুমার মণ্ডল তা নির্দিষ্ট করে বলে দিয়েছেন।
বর্ধমানের বাসিন্দা শ্যামল দত্ত ও সোমা মুখোপাধ্যায় আদালতে অভিযোগ করেছিলেন, নিয়মনীতি না মেনে দিনের পর দিন সর্বমঙ্গলা মন্দির পরিচালনা করছে ট্রাস্টি বোর্ড। তাঁদের আবেদন ছিল, ওই বোর্ড ভেঙে দিয়ে আদালতের নজরদারিতে পরিচালনা হোক। বুধবার মামলার শুনানি হয়। আবেদনকারীদের অন্যতম আইনজীবী রাজদীপ গোস্বামী বলেন, “বিচারক বুধবারই তাঁর রায়ে জানিয়েছেন, ট্রাস্টি বোর্ডের উপরে তিন স্পেশ্যাল অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। তাঁরাই মন্দির পরিচালনা থেকে মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণ করবেন।”
আইনজীবীরা জানান, এই বিশেষ অফিসারেরা হলেন বর্ধমান জেলা আদালতের আইনজীবী তথা বর্ধমান পুরসভার কাউন্সিলর সমীর রায়, বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সদন তা ও প্রবীণ আইনজীবী বিশ্বনাথ নাগ। রায়ে বলা হয়েছে, বৈঠকের লিখিত সিদ্ধান্ত (রেজোলিউশন বই) থেকে হিসাবপত্র তাঁরাই দেখবেন। প্রতি তিন মাস অন্তর চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট দিয়ে হিসাব পরীক্ষা করিয়ে অডিট রিপোর্ট আদালতে জমা দিতে হবে। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, দৈনন্দিন হিসাব, উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণ সামলাবেন আদালতের নিযুক্ত অফিসারেরাই।
রাজদীপবাবু আরও জানান, মন্দির পরিচালনার ক্ষেত্রে অফিসাররা যাতে কোনও অসুবিধায় না পড়েন তার জন্য জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারকে বিষয়টি দেখতে বলেছেন বিচারক। রাজদীপবাবু বলেন, “তিন অফিসার মন্দির পরিচালনায় কোনও অসুবিধার সম্মুখীন হলে জেলা বিচারক দায়িত্ব নেবেন বলে জানিয়েছেন।”
বুধবার মামলার শুনানির সময়ে আদালতের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন ট্রাস্টি বোর্ডের আইনজীবীরা। পরে এক আইনজীবী প্রকাশ্যে বিচারকরে কাছে ক্ষমা চেয়ে পার পেয়ে যান। আর এক আইনজীবী লিখিত ভাবে ওই প্রশ্ন তোলায় বিচারক তাঁকে ২৭ মে-র মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছেন। সুমন বেজ নামে ওই আইনজীবী বলেন, ‘‘নতুন ট্রাস্টি বোর্ড গঠন হয়েছে, সবে দশ দিন হল। তাই তাদের বিরুদ্ধে মামলা নিয়েই আমাদের প্রশ্ন ছিল। আদালতের রায়ের প্রত্যয়িত নকল হাতে পেলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।’’