গ্রেফতার হওয়া তিন জন।নিজস্ব চিত্র।
পরিকল্পনা ছিল, প্রথমে দুর্গাপুরের এক ব্যবসায়ীকে এবং তার পরে ও়়ড়িশার বালাসোরে গিয়ে আরও এক জনকে খুন করার। কিন্তু ‘সুপারি কিলার’দের যাবতীয় পরিকল্পনা ভেস্তে দিল সিআইডি। যারা এই পরিকল্পনা করেছিল বলে তদন্তকারীদের দাবি, ভিন রাজ্যের বাসিন্দা সেই তিন জনকেই সোমবার দুর্গাপুরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের বেনাচিতি উত্তরপল্লি এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। ওই অভিযানে সঙ্গে ছিল দুর্গাপুর থানার পুলিশ।
ধৃতদের নাম রবি চৌরাসিয়া, অজিত সিংহ ও জিতেন্দ্র কুমার। তারা যথাক্রমে জামসেদপুর, পটনা ও ঝাড়খণ্ডের ছোটগোবিন্দপুরের বাসিন্দা। সিআইডি জানায়, তিন জনেই ‘সুপারি-কিলার’। ধৃতদের কাছ থেকে মাদক ও আগ্নেয়াস্ত্র মিলেছে। সিআইডি জানায়, ধৃতদের কাছ থেকে ২৮০ গ্রাম মাদক, একটি পিস্তল, দু’টি পাইপগান ও সাত রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার হয়েছে। সিআইডি-র একটি সূত্রের দাবি, উদ্ধার হওয়া মাদক প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে হেরোইন। আরও দাবি, জেরায় জিতেন্দ্র জানিয়েছে, গত ৪ জুলাই আসানসোলের সেনরেলে রোডের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখায় ডাকাতির সঙ্গেও সে জড়িত ছিল।
সিআইডি সূত্রে জানা যায়, মাস ছয়েক আগে রবি পরিবহণ ব্যবসায়ী পরিচয়ে উত্তরপল্লি এলাকায় একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে সস্ত্রীক বসবাস শুরু করে। তার নামে খুন, ডাকাতি, ছিনতাই-সহ প্রায় ৪০ টি মামলা রয়েছে বিভিন্ন রাজ্যে। সিআইডি-র দাবি, দুর্গাপুরের এক পরিচিত ব্যক্তিকে খুনের জন্য কয়েক লক্ষ টাকার ‘সুপারি’ নিয়েছিল রবি। তার বাড়িতে এসে সঙ্গে যোগ দেয় জিতেন ও অজিত। তিন জনে মিলেই খুন করার ছক কষতে থাকে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সিআইডির সাত সদস্যের দলটি দুর্গাপুর থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে এ দিন বিকেলে হানা দেয় উত্তরপল্লিতে।
উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র। নিজস্ব চিত্র
সিআইডি জানায়, ওই দলটির প্রথমে দুর্গাপুরের এক ব্যবসায়ীকে খুন করার পরিকল্পনা ছিল। তার পরে তারা রওনা দিত বালাসোরে গিয়ে খড়্গপুরে। সেখানেও তাদের এক জনকে খুন করার ‘সুপারি’ দেওয়া হয়েছিল বলে তদন্তকারীদের দাবি। শুধু তাই নয়, রবি ও জিতেন্দ্র ২০১৫-র ৬ ফেব্রুয়ারি পুরুলিয়ার হুড়ায় জামসেদপুরের বাসিন্দা দীপক প্রসাদ নামে এক ট্রাক চালককে খুনের ঘটনাতেও জড়িত।
দুর্গাপুরে যে বাড়িতে রবি ভাড়া থাকত, সেই একই বাড়িতে ভাড়া থাকেন মৌসুমী সেন। পাশের ঘরে এ ভাবে দুষ্কৃতীরা জড়ো হয়েছিল তা ভাবতেও পারছেন না তিনি। মৌসুমীদেবীর স্বামী পুলিশে চাকরি করতেন। তাঁর নিজেরও পুলিশে চাকরি পাওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। তিনি বলেন, ‘‘সিআইডি ও পুলিশকর্মীরা এই বাড়িতেই ঢুকছেন দেখে অবাক হয়ে যাই।’’ পাড়া থেকে এ ভাবে তিন জনের গ্রেফতারির খবরে চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়।