প্রতীকী ছবি।
জ্বর, ডায়রিয়া, সর্দি, কাশি-সহ নানা উপসর্গে আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা চলছে আসানসোল জেলা হাসপাতাল এবং দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে। পাশাপাশি, এই প্রথম পশ্চিম বর্ধমানে কোভিড আক্রান্ত তিনটি শিশুর সন্ধান মিলেছে বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে। এ দিকে, দুর্গাপুরে ‘ইঞ্জেকশন কাণ্ডে’র তদন্তে উঠে এসেছে, কোথাও কোনও অনিয়ম হয়নি। তবে, সংশ্লিষ্ট অ্যান্টিবায়োটিক-ইঞ্জেকশনটি কেনা হয়েছিল‘স্থানীয় ভাবে’।
রবিবার জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) শেখ মহম্মদ ইউনুস বলেন, “আসানসোল জেলা হাসপাতালে ৬৯টি শিশুর চিকিৎসা চলছে। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি করানো হয়েছে ১৩ জনকে। দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে এই সংখ্যাটা যথাক্রমে, ৬৬ জন এবং ১১ জন।” জেলার সহকারী স্বাস্থ্য আধিকারিক (এসিএমওএইচ) কেকা মুখোপাধ্যায় জানান, আসানসোলে একশোটিরও বেশি এবং দুর্গাপুরে ৫০টি শিশুর কোভিড পরীক্ষা করানো হয়। তঁার সংযোজন: “আসানসোলে সব শিশুরই কোভিড রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। তবে, দুর্গাপুরে তিন জন শিশু করোনা আক্রান্ত। এই প্রথম, জেলায় শিশুদের কোভিড আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা সামনে এল। ওই তিনটি শিশুর শারীরিক অবস্থা তবে স্থিতিশীল।”
বিষয়টি জানাজানি হতেই, চিন্তায় জেলার চিকিৎসকেরা। রাজ্যের পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানের কোভিড মনিটরিং কমিটির কো-অর্ডিনেটর সমরেন্দ্রকুমার বসু বলেন, “মূলত বড়দের অসচেতনতার জন্যই শিশুরা কোভিড আক্রান্ত হচ্ছে। এ-ও দেখা যায়, প্রতিষেধকের দু’টি ডোজ় নেওয়ার পরে, অনেকেই ‘মাস্ক’ পরা, দূরত্ববিধি রক্ষার মতো সাধারণ বিষয়গুলি মানছেন না। মনে রাখতে হবে, এর প্রভাব পড়ছে বাড়ির শিশুটির উপরে। এখনই সবাইকে সতর্ক হতে হবে।” এ দিকে, শারদ-মরসুমের ভিড়ে কী ভাবে এই সমস্ত বিষয়গুলি সামাল দেওয়া যায়, তা নিয়ে মহকুমা স্বাস্থ্য দফতর (দুর্গাপুর) ও দুর্গাপুর পুরসভার সঙ্গে আলোচনা করে পদক্ষেপ করার কথা জানিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর।
পাশাপাশি, দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ‘ইঞ্জেকশন-কাণ্ডে’ কয়েক জন শিশুর ‘অসুস্থ’ হওয়ার অভিযোগ করেছিলেন অভিভাবকদের একাংশ। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় মহম্মদ সাহেদ আনসারি নামে একটি শিশুকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরও করতে হয়েছিল। সাহেদ এবং মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অন্য শিশুদের শারীরিক অবস্থা এই মুহূর্তে স্থিতিশীল, দাবি স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে।
এ দিকে, ওই ঘটনায় কেকার নেতৃত্বে স্বাস্থ্য দফতর শনি ও রবিবার তদন্ত করেছে। কেকা বলেন, “দেখা গিয়েছে, নির্দিষ্ট নিয়ম ও সতর্কতা মেনেই ঠিক ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছিল। তবে, সরবরাহ না থাকার কারণে, হাসপাতালকে সংশ্লিষ্ট ইঞ্জেকশনটি স্থানীয় ভাবে কিনতে হয়েছিল। তাতে কিছু সমস্যা দেখা দেয়। তবে, শিশুরা সবাই ভাল আছে।”
সেই সঙ্গে, এ দিন মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিশুদের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক জন অভিভাবক অভিযোগ করেন, একটি শয্যায় একাধিক শিশুকে রাখা হয়েছে। এর ফলে, সংক্রমণ ছড়াতে পারে বলে তাঁদের আশঙ্কা। অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন মহকুমা হাসপাতালের সুপার ধীমান মণ্ডল।