ত্রিপাক্ষিক বৈঠকেও কোনও সমাধান সূত্র না মেলায় সোমবারও পাণ্ডবেশ্বরের শোনপুর বাজারি প্রকল্পে ঠিকাদার সংস্থার হাতে দেওয়া প্যাচ সম্প্রসারণের কাজ বন্ধ রইল। রবিবারের ওই বৈঠকে প্রকল্পের এজিএম, বেসরকারি ঠিকা সংস্থা ও তৃণমূল প্রভাবিত কয়লা খাদান ঠিকা শ্রমিক কংগ্রেসের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
ঠিকাদার সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার খনি পরিদর্শনের সময়ে সংস্থার কর্তাদের নজরে পড়ে, ১৭ জন শ্রমিক-কর্মী কাজ করছেন না। অভিযোগ, কাজ করতে বলায় আধিকারিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন ওই শ্রমিকেরা। সে কারণে তাঁদের বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। এই খবর জানাজানি হওয়ার পরে সে দিন বিকেলেই প্রতিবাদে প্যাচের ৩৮০ জন শ্রমিক-কর্মীর মধ্যে ১৮০ জন ইস্তফা দেন। শুক্রবার সকাল থেকে কাজ বন্ধ করে বিক্ষোভ শুরু হয়। সে দিন আরও ১৩৪ জন ইস্তফা দেন। এর জেরে ওই দিন থেকে এখনও পর্যন্ত কাজ পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।
প্রথমে শ্রমিকদের ওই আন্দোলন অরাজনৈতিক দাবি করলেও শুক্রবার বিকেল থেকে তাঁদের পাশে দাঁড়ায় আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত কয়লা খাদান ঠিকা শ্রমিক কংগ্রেস। বিভিন্ন দাবি নিয়ে ওই দিনই তারা ওই ঠিকাদার সংস্থাকে স্মারকলিপিও দেয়। তারপরেই শোনপুর বাজারি প্রকল্পের জেনারেল ম্যানেজার একটি ত্রিপাক্ষিক ডাকেন।
রবিবারের বৈঠকে শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা জানান, ওই ১৭ জনকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে। এ ছাড়া স্মারকলিপির বিভিন্ন দাবিগুলিও সদর্থক মনোভাব নিয়ে দেখার আবেদন জানানো হয়। তবে ঠিকা সংস্থার তরফে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করায় বৈঠক কার্যত ভেস্তে যায়। এরপর এজিএম ফের ২০ মে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে ডেকেছেন। কয়লা খাদান ঠিকা শ্রমিক কংগ্রেসের তরফে নরেন চক্রবর্তী যদিরও দাবি, ‘‘কাজ বন্ধ রাখার পক্ষপাতি নই আমরা। তবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না হলে কেউ কাজে যোগ দেবেন না বলে ঠিকা কর্মীরাই জানিয়েছেন।’’ সোমবার সংগঠনের তরফে কর্তৃপক্ষকে ওই মর্মে চিঠিও দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। নরেনবাবুর আভিযোগ, “সোমবার ওই ঠিকাদার সংস্থা ফের একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, যাঁরা ইস্তফা দেননি সেইসব কর্মীরা কাজে যোগ দিতে পারেন। কাজে যোগ না দিলে তাঁদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ নরেনবাবুদের হুঁশিয়ারি, তেমনটা হলে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটবেন তাঁরা। ঠিকা সংস্থার এক আধিকারিক যদিও বলেন, ‘‘চাপের মুখো কোনও রকম অন্যায় দাবির সঙ্গে আপোস করা হবে না। তেমনটা হলে কাজ গোটাতেও বাধ্য হব আমরা।’’ শোনপুর বাজারি প্রকল্পের এজিএম অলোককুমার সেনগুপ্ত জানান, সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।