ফাইল চিত্র।
প্রাথমিক প্রার্থিতালিকায় বেশ কিছু বিতর্কিত কাউন্সিলরের নাম রয়েছে, দাবি করছিল দলের একাংশ। সে নিয়ে অসন্তোষও তৈরি হচ্ছিল দলের অন্দরে। মঙ্গলবার দুর্গাপুরের পুরভোটের জন্য তৃণমূলের প্রার্থিতালিকা প্রকাশের পরে দেখা গেল, বাদ দেওয়া হয়েছে সেই সব বিদায়ী কাউন্সিলরদের নাম। অন্য দল থেকে সদ্য দলে যোগ দেওয়া বা তৃণমূলের হাত ধরে সম্প্রতি রাজনীতিতে আসা কয়েকজনকেও প্রার্থী করা হয়েছে। তালিকায় রয়েছেন দলের দুর্দিনে সঙ্গে থাকা কিছু নেতাও।
এ দিন তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পরে দেখা যায়, গত বারের মোট ১৪ জন কাউন্সিলরের নাম বাদ পড়েছে। তাঁদের জায়গায় এসেছে নতুন মুখ। ভোট ঘোষণার আগেই দলের হয়ে তড়িঘড়ি দেওয়াল লিখন শুরু করেছিলেন ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অরবিন্দ নন্দী। নির্দল হিসেবে জিতে পরে তৃণমূলে যোগ দেওয়া এই কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে গত কয়েক বছরে কল-কারখানায় নানা অশান্তি পাকানোর অভিযোগ উঠেছে। তাঁর কাজকর্মে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন দলের পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাসও। এ বার তাঁকে প্রার্থী করা হয়নি।
পরিস্থিতি আঁচ করে অরবিন্দবাবু অবশ্য আগেই স্ত্রী সুনীতার নামে মনোনয়নপত্র তুলেছেন। এ দিন তিনি দাবি করেন, ‘‘তৃণমূল ছেড়ে দিয়েছি। আর ফিরব না। দুর্গাপুরের সংগঠনে অন্য জায়গার নেতাদের খবরদারি মানা সম্ভব নয়।’’ কাউন্সিলর হওয়ার পরে বিভিন্ন সময়ে ঝামেলায় জড়িয়েছেন হিরা বাউড়ি, চন্দন সাহা, নিমাই গড়াইয়ের মতো কাউন্সিলররাও। এ বার তাঁদেরও প্রার্থী করা হচ্ছে না। দলের তরফে অনেকের ওয়ার্ড বদলে দেওয়া হয়েছে। আবার সংরক্ষণের আওতায় পড়ার জন্যও অনেক কাউন্সিলরের ওয়ার্ড বদলে গিয়েছে।
ভোটের ঢাকে কাঠি পড়ার অনেক আগে থেকেই কংগ্রেস বিধায়ক বিশ্বনাথ পাড়িয়াল তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন বলে চর্চা শুরু হয় শহরে। যদিও তিনি আপাতত তৃণমূলের হাত ধরছেন না বলে দাবি করেছেন তাঁর অনুগামীরা। তবে তাঁর স্ত্রী ও কয়েক জন অনুগামী শাসকদলে যোগ দিয়েছেন। তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, বিশ্বনাথবাবুর দাবি মেনেই তাঁর স্ত্রী-সহ মোট ছ’জন অনুগামীকে প্রার্থী করেছে দল। এ দিন দলের জেলা নেতারা অবশ্য বলেন, ‘‘যোগ্যতা দেখেই প্রার্থী করা হয়েছে। কংগ্রেস বিধায়কের দাবি কেন তৃণমূল মানতে যাবে!’’
সম্প্রতি বামফ্রন্ট ছেড়ে দলে যোগ দেওয়া তিন কাউন্সিলরকেও এ বার টিকিট দিচ্ছে তৃণমূল। সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া প্রাক্তন সরকারি আধিকারিক দিলীপ অগস্তি বা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর বিমল জালানের ভাইঝি ধৃতি বন্দ্যোপাধ্যায়কেও প্রার্থী করা হচ্ছে। তবে তালিকায় নেই বিজেপি ছেড়ে আসা নেতা অখিল মণ্ডল। দুর্গাপুরে দায়িত্বপ্রাপ্ত এক তৃণমূল নেতার বক্তব্য, ‘‘যোগ্যতার প্রশ্নে বাদ পড়েছেন উনি।’’
প্রার্থী তালিকা অনুযায়ী, ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে দলের আইনজীবী সেলের সদস্য দেবব্রত সাঁই এবং কল্লোল ঘোষের নাম রাখা হয়েছে। চূড়ান্ত প্রার্থী কে হবেন, তা পরে ঠিক হবে বলে জানান তৃণমূল নেতারা। ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী পরে ঘোষণা করা হবে বলে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে।