চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানা নেই। তবু কাঁকসা ও বুদবুদ থানা এলাকাকে প্রস্তাবিত নতুন জেলায় না রাখার সম্ভাবনার কথা জেনে টানা সাত দিন কর্মবিরতি করছেন দুর্গাপুর আদালতের আইনজীবীরা। ফলে, আদালতের কাজকর্ম কার্যত শিকেয়। আইনজীবীদের দাবি, ভবিষ্যতের কথা ভেবেই এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন জেলা গঠনের প্রাথমিক প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত। নতুন জেলায় দুর্গাপুর মহকুমার মধ্যে থাকা কাঁকসা ও বুদবুদ— এই দুই থানা থাকছে না বলে প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমানে মাটি উৎসবের উদ্বোধনের দিন দুর্গাপুরের স্থানীয় নেতৃত্বের একাংশ আইনজীবীদের এই দাবির কথা এক মন্ত্রীর কাছে জানান। মন্ত্রী জানান, অনেকটা দেরি হয়ে গিয়েছে। তবু মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দাবি পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাস দেন।
তার পর থেকেই ফাঁপড়ে পড়েছেন তৃণমূল আইনজীবী সেলের সদস্যেরা। সেলের সভাপতি দেবব্রত সাঁই জানান, আজ, শুক্রবার রাজ্য বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি তাঁরা জানাবেন। আইনজীবীদের কর্মসূচির ফলে আদালতের কাজকর্ম ব্যাহত হওয়ার প্রসঙ্গে বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অনুপম মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “বৃহত্তর স্বার্থে আমরা আন্দোলনে নেমেছি। কাঁকসা ও বুদবুদ দুর্গাপুর আদালতের আওতা থেকে চলে গেলে আইনজীবী, ল-ক্লার্ক, টাইপিস্টদের রোজগার কমবে। ভোগান্তি বাড়বে ওই এলাকার মানুষজনেরও।’’
তৃণমূল নেতা তথা শহরের ডেপুটি মেয়র অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘এর আগে একাধিক বার শুনানি হয়েছে। তখন আইনজীবীদের তরফে সক্রিয়তা নজরে আসেনি। তবে কাঁকসা-বুদবুদ যাতে দুর্গাপুরেই থাকে সেই চেষ্টা আমরা চালিয়ে যাচ্ছি।’’ সিপিএমের পক্ষ থেকে জানানো হয়, নতুন জেলায় দুর্গাপুরের স্বার্থ যাতে সুরক্ষিত থাকে তা নিয়ে বারবার দলের পক্ষ থেকে রাজ্যকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ১৩টি বাম গণ সংগঠনের যৌথ মঞ্চের তরফে একাধিক বার মিছিল করা হয়েছে, শহরবাসীর সই সংগ্রহ করে পাঠানো হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক সিপিএম নেতা পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, ‘‘আমাদের যৌথ মঞ্চের মধ্যে আইনজীবীদের একটি সংগঠনও আছে। আমরা তাঁদের দাবির সঙ্গে সহমত। তাছাড়া দুর্গাপুরের পরিসর কোনও ভাবেই কমানোর পক্ষপাতী নই আমরা।’’