খেত থেকে স্কুলে ধোঁয়া, অসুস্থ শিক্ষিকা, পড়ুয়ারা

ঘটনায় আতঙ্ক ছড়ায় স্কুলে। ছুটোছুটি শুরু করে দেয় পড়ুয়ারা। পঞ্চম, ষষ্ঠ, অষ্টম ও নবম শ্রেণির ২০ জন অসুস্থ হয়ে পড়ে। অসুস্থ হন সোমা বসাক নামে এক শিক্ষিকা। সঙ্গে সঙ্গেই ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক অমলকৃষ্ণ মণ্ডলকে ডাকেন প্রধান শিক্ষক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাটোয়া শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৭ ০১:০৬
Share:

দূষণ: কাটোয়ার সুদপুর স্কুলের পাশ থেকে তখনও ধোঁয়া উঠছে। নিজস্ব চিত্র

ক্লাসের মাঝেই ধোঁয়া ঢুকতে শুরু করে ঘরে। জানালা, দরজা বন্ধ করার আগেই পাশের জমি থেকে আসা ধোঁয়ায় ভরে যায় ঘর। তার মধ্যে লোডশেডিং। শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায় পড়ুয়াদের। শিক্ষক-শিক্ষিকারা কোনওরকমে তাদের বের করেন। মঙ্গলবার দুপুরে কাটোয়ার সুদপুর হাইস্কুলে ওই ঘটনায় ২০ জন পড়ুয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অসুস্থ হয়ে পড়েন এক শিক্ষিকাও। তবে আপাতত তাদের অবস্থা স্থিতিশীল।

Advertisement

স্কুল সূত্রে জানা যায়, তখন দুপুর ১২টা। প্রার্থনার পরে প্রথম ক্লাস চলছে। আচমকা স্কুলের পূর্ব দিকের ওই মাঠ থেকে ধোঁয়া আসতে শুরু করে। দোতলার অষ্টম ও নবম শ্রেণির ঘর ধোঁয়ায় ছেয়ে যায়। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অনুপম রায় বলেন, ‘‘কয়েক দিন ধরেই কাঠা দশেক জমিতে ডাঁই করে তিলের কাচকি (ব্যবহারের পরে ফেলে দেওয়া অংশ) রাখা ছিল। এ দিন কেউ তাতে আগুন দিলে সেই ধোঁয়াতেই অসুস্থ হয় পড়ুয়ারা।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘ওই সময় লোডশেডিং ছিল। ফলে ঘরে ঢোকা ধোঁয়া বের করা যায়নি।’’

হাসপাতালে ছাত্রীরা। নিজস্ব চিত্র

Advertisement

ঘটনায় আতঙ্ক ছড়ায় স্কুলে। ছুটোছুটি শুরু করে দেয় পড়ুয়ারা। পঞ্চম, ষষ্ঠ, অষ্টম ও নবম শ্রেণির ২০ জন অসুস্থ হয়ে পড়ে। অসুস্থ হন সোমা বসাক নামে এক শিক্ষিকা। সঙ্গে সঙ্গেই ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক অমলকৃষ্ণ মণ্ডলকে ডাকেন প্রধান শিক্ষক। তিনি এসে কয়েকজন পড়ুয়ার প্রাথমিক চিকিৎসা করেন। প্রায় অচৈতন্য পড়ুয়াদের মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালে শুয়ে নারায়ণপুরের বাসিন্দা, নবম শ্রেণির অনিতা দেওয়ান, সুদপুরের অষ্টম শ্রেণির সঞ্চিতা হালদারেরা বলে, ‘‘আচমকা ক্লাসরুম ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। দম বন্ধ হয়ে যেতে শুরু করে। বমি পায়। স্যারেরা কোনওরকমে আমাদের টেনে বের করেন।’’ আতঙ্কে স্কুল থেকে বাড়ি চলে যায় ৫ জন পড়ুয়া। তাদেরও পরে অভিভাবকেরা হাসপাতালে ভর্তি করান। ক্লাস ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। কোনও অভিযোগ না করলেও বিষয়টি মৌখিক ভাবে বিডিওকে জানান অনুপমবাবু।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, যেহেতু স্কুলের পাশেই জমি তাই ওই সময় আগুন না লাগিয়ে বিকেল বা সন্ধ্যায় লাগানো উচিত ছিল। তাহলে পড়ুয়ারা কষ্ট পেত না। ওই জমির মালিক আকাশ ঘোষের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।

ব্লক কৃষি আধিকারিক আজমির হোসেন জানান, চাষের বর্জ্য জমিতে পোড়ালে মাটিতে কার্বনের ভাগ বেড়ে জমির মান নষ্ট হয়। চাষিদের বোঝানোর পরেও অনেক জায়গায় এমন হয় বলে তাঁর দাবি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement