Education teacher student kalna

পড়াশোনা নিয়ে দাদু-ঠাকুমার মত শুনল স্কুল

স্কুলের পড়ুয়া সংখ্যা প্রায় দু’হাজার। ইংরেজি মাধ্যম চালু হয়েছে স্কুলে। ২০ লক্ষ টাকা খরচে গড়ে উঠেছে আধুনিক ল্যাবরেটরি। এ ছাড়া, ‘স্মার্ট ক্লাস’, প্রতিটি ক্লাসঘরে ছোট-ছোট গ্রন্থাগার, মাধ্যমিকের আগে পিছিয়ে পড়া ছাত্রদের জন্য দিন-রাতের কোচিং ক্যাম্প, মেধাবী পড়ুয়াদের ফি মকুব-সহ নানা পদক্ষেপ করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:০৮
Share:

কালনা মহারাজা উচ্চ বিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানে। নিজস্ব চিত্র

ছাত্রদের পড়াশোনার মানোন্নয়নের জন্য ঠাকুরদা-ঠাকুমা, দাদু-দিদিমাদের ডেকে মতামত নিলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। শনিবার কালনার মহারাজা উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সে জন্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। দেড়শো বছর পার করা স্কুলটির এমন উদ্যোগে আপ্লুত অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া প্রবীণ-প্রবীণারা।

Advertisement

স্কুলের পড়ুয়া সংখ্যা প্রায় দু’হাজার। ইংরেজি মাধ্যম চালু হয়েছে স্কুলে। ২০ লক্ষ টাকা খরচে গড়ে উঠেছে আধুনিক ল্যাবরেটরি। এ ছাড়া, ‘স্মার্ট ক্লাস’, প্রতিটি ক্লাসঘরে ছোট-ছোট গ্রন্থাগার, মাধ্যমিকের আগে পিছিয়ে পড়া ছাত্রদের জন্য দিন-রাতের কোচিং ক্যাম্প, মেধাবী পড়ুয়াদের ফি মকুব-সহ নানা পদক্ষেপ করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।

স্কুল সূত্রে জানা যায়, অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে প্রতিটি ক্লাস ধরে সামাজিক মাধ্যমে আলাদা ‘গ্রুপ’ খোলা হয়েছে। সেখানে শিক্ষকেরা প্রতি দিনের হোমওয়ার্ক জানিয়ে দেন। পড়াশোনার ব্যাপারে অবিভাবকদের মতামত জানতে চাওয়া হয়। সম্প্রতি প্রতিটি ক্লাসে নজরদারির জন্য বসানো হয়েছে ৪৮টি সিসি (‌ক্লোজ়ড সার্কিট) ক্যামেরা।

Advertisement

সম্প্রতি স্কুল কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেন, ভাল ছাত্র তৈরিতে শুধু অভিভাবক হিসাবে মা-বাবা নন, ঠাকুরদা-ঠাকুমাদের মতামতকেও গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। কারণ, বহু খুদেই দিনের অনেকটা সময় বাড়িতে তাঁদের সঙ্গে কাটায়। ঠাকুরদা-ঠাকুমারা ওই খুদেদের প্রতি যত্নবান হলে শুধু পড়াশোনার মানোন্নয়ন নয়, তাদের মানসিক বিকাশও আরও ভাল ভাবে হবে বলে ধারণা স্কুল কর্তৃপক্ষের।

এ দিন স্কুলের তরফে শ’পাঁচেক পড়ুয়ার ঠাকুরদা-ঠাকুমা, দাদু-দিদিমাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। স্কুল চত্বরে এই অনুষ্ঠানে একটি মঞ্চে ওই প্রবীণেরা তাঁদের মতামত জানান। অনেকে স্কুলকে নানা পরামর্শও দেন। নাতির হাত ধরে অশোককুমার পাল বলেন, ‘‘আমি নিজেও এই স্কুলে পড়াশোনা করেছি। তবে এক সময়ে ছাত্রেরা স্কুলে না এলে বাড়ি থেকে তার কারণ জানিয়ে চিঠি নিয়ে এসে স্কুলে জমা দিতে হত। এখন সে ব্যবস্থা উঠে গিয়েছে। তা আবার চালু হোক।’’

সুশান্ত পাণ্ডের মতে, মোবাইলের প্রভাব পড়ছে পড়াশোনায়। পড়াশোনার সময়ে যাতে পড়ুয়ারা হাতে মোবাইল না নিতে পারে, সে দিকে নজর রাখা প্রয়োজন। মায়া সূত্রধর, রমিলা বিবি, প্রতাপেশ্বর দাসেরা স্কুলের এমন উদ্যোগের প্রশংসা করে জানান, তাঁরা এ ব্যাপারে যাবতীয় সহযোগিতা করবেন। অনুষ্ঠানের পরে মধ্যাহ্নভোজেরও আয়োজন করেছিল স্কুল।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্রীমন্ত ঘোষ বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের মা-বাবার সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক হয়। তবে আমরা মনে করি, ছাত্রদের সঙ্গে দাদু-ঠাকুমাদের ভাল সম্পর্ক থাকে। তাই তারা নিয়মিত স্কুলে এসে নাতিদের খোঁজখবর নিলে আরও ভাল ফল হবে।’’ তিনি জানান, প্রথম অনুষ্ঠানে বেশ কিছু পরামর্শ উঠে এসেছে। স্কুল সেগুলি গুরুত্ব দিয়ে দেখবে। স্কুলের আর এক শিক্ষক তাপসকুমার কার্ফার আশা, আগামী দিনে এই উদ্যোগের ভাল ফল মিলবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement