অধ্যক্ষের অফিসের সামনে অবস্থান। সোমবার বিকেলে। নিজস্ব চিত্র
অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে কলেজের অধ্যক্ষকে কয়েক ঘণ্টা ধরে ঘেরাও করে রাখলেন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ। পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরের গৌরমোহন রায় কলেজে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এই ঘেরাও চলে। অধ্যক্ষ নানা গুরুত্বপূর্ণ নথিতে সই করছেন না, গভর্নিং বডির বৈঠক ডাকছেন না-সহ নানা অভিযোগ তোলেন ওই ওই শিক্ষক-শিক্ষিকারা। অধ্যক্ষ বসন্ত খামরুই অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা দাবি করেন, গত দু’বছর ধরে ওই শিক্ষক-শিক্ষিকারাই কলেজের বিভিন্ন কমিটির কোনও কাজ করছেন না।
১৬ ডিসেম্বর থেকে ছাত্রছাত্রীদের অনলাইনে ক্লাস শুরু হবে। সে সংক্রান্ত কাজকর্মের জন্য শিক্ষক-শিক্ষিকারা এ দিন কলেজে আসেন। তাঁদের দাবি, কাগজপত্রে অধ্যক্ষের সই করানোর জন্য দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টে পর্যন্ত অপেক্ষা করলেও, তিনি কারও ফাইলে সই করেননি। এর পরেই ১২ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা অধ্যক্ষের অফিসের দরজার সামনে বসে ঘেরাও-বিক্ষোভ শুরু করেন।
শিক্ষক-শিক্ষিকা কালোসোনা রায়, রুম্পা সরকার, ছন্দা কার্ফা, তনয়কুমার পাল, পদ্মজা মণ্ডলদের অভিযোগ, অধ্যক্ষ নানা বিষয়ে তাঁদের সঙ্গে অসহযোগিতা করছেন। বিশ্ববিদ্যালয় ও ইউজিসি-র নিয়ম অনুযায়ী, যে সমস্ত কাগজপত্র পাঠাতে হয়, সেগুলি অধ্যক্ষের কাছে জমা দিলেও তিনি ঢিলেমি করছেন। নানা অজুহাতে সেগুলিতে সই না করে এড়িয়ে যাচ্ছেন। আরও অভিযোগ, বছরে চার বার গভর্নিং বডির বৈঠক করার কথা থাকলেও এ বছর এখনও একটিও ডাকা হয়নি। অধ্যক্ষ দু’-এক জন শিক্ষাকর্মীকে নানা সুযোগ-সুবিধা পাইয়ে দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ ওই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের।
অধ্যক্ষ সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা অভিযোগ করেন, ওই শিক্ষক-শিক্ষিকারাই কলেজের বিভিন্ন কমিটির কোনও কাজ করছেন না। সব কাজ তাঁর উপরে চাপিয়ে দিচ্ছেন। ব্যক্তিগত দাবিদাওয়া নিয়েই ওই শিক্ষক-শিক্ষিকারা ব্যস্ত থাকছেন বলেও দাবি করেন তিনি। কিছু শিক্ষক-শিক্ষিকা অনুমতি ছাড়াই তাঁর ঘরে ঢুকে পড়েন ও দুর্ব্যবহার করেন বলেও অধ্যক্ষের অভিযোগ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘করোনা-পরিস্থিতির জন্য গভর্নিং বডির বৈঠক এ বার ডাকা যায়নি।’’
প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ ঘেরাও ওঠে। ওই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দাবি, তাঁরা বিষয়গুলি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে অভিযোগ জানাবেন। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজসমূহের পরিদর্শক (আইসি) সুজিত চৌধুরী জানান, কী ঘটেছে খোঁজ নেওয়া হবে। কোনও অভিযোগ পেলে, তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।