প্রতীকী ছবি।
শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ ও শিক্ষাসামগ্রী কেনার জন্য সর্বশিক্ষা অভিযানের টাকা পেয়েছিল বারাবনির একটি স্কুল। কিন্তু শিক্ষা দফতরের কাছে জমা দেওয়া সেই টাকা খরচের হিসেবে গরমিলের অভিযোগ উঠেথে ওই স্কুলের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। শিক্ষা দফতর ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্কুল পরিচালন সমিতিকে পরামর্শ দিয়েছে। মঙ্গলবার স্কুলের প্রধান শিক্ষক পুলিশ কমিশনারেটে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্ত শিক্ষক অবশ্য দাবি করেন, এই অভিযোগ মিথ্যে। এর বিরুদ্ধে তিনি আদালতে মামলা করেছেন।
বারাবনির পুচরা ভগবান মহাবীর দিগম্বর জৈন সড়াক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ উপাধ্যায় জানান, ২০০৬-০৮ সালে স্কুলে সর্বশিক্ষা অভিযানের তরফে ধাপে-ধাপে প্রায় তিন লক্ষ টাকা অনুদান আসে। সেই টাকা খরচও করেন স্কুলের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক লক্ষণচন্দ্র পাল। নিয়ম অনুযায়ী, খরচের হিসেব সর্বশিক্ষা অভিযানের কাছে জমা দেওয়ার কথা। অভিযোগ, লক্ষণবাবু যে হিসেব জমা দেন, তাতে প্রচুর গরমিল ও অস্বচ্ছতা রয়েছে। অভিজিৎবাবু বলেন, ‘‘২০০৯ সালে আমি প্রধান শিক্ষক হিসেবে স্কুলে যোগ দেওয়ার পরে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। এ দিকে সর্বশিক্ষা অভিযানের তরফে বারবার আমাকে ঠিক হিসেব জমা দিতে বলা হয়। আমিও লক্ষণবাবুকে স্বচ্ছ ভাবে হিসেব জমা দিতে অনুরোধ করি। কিন্তু তিনি বারবার আমার অনুরোধ ফিরিয়ে দেন। অগত্যা পুরো বিষয়টি শিক্ষা দফতর ও সর্বশিক্ষা অভিযানের কাছে জানিয়ে তদন্ত করার অনুরোধ করি।’’
আসানসোলের অতিরিক্ত জেলা স্কুল পরিদর্শক অজয় পাল জানান, শিক্ষা দফতর ও সর্বশিক্ষা অভিযানের আধিকারিকেরা আলাদা ভাবে এই অভিযোগের তদন্ত করেন। তিনি বলেন, ‘‘তদন্ত শেষে আমরা বুঝেছি, ওই টাকা খরচের হিসেবে অনেক গরমিল ও অস্বচ্ছতা আছে। এক মাস আগে জেলা স্কুল পরিদর্শক শেষ বার তদন্ত করে অস্বচ্ছতা পাওয়ায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপের জন্য স্কুল পরিচালন সমিতিকে পরামর্শ দেন।’’
অভিযুক্ত শিক্ষক লক্ষণবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত হচ্ছে। এ সব মিথ্যে অভিযোগ। আমি ওই সময়ে স্কুল পরিচালন সমিতির কথা মতো টাকা খরচ করেছি ও হিসেব দিয়েছি।’’ মিথ্যে অভিযোগের বিরুদ্ধে তিনি কলকাতা হাইকোর্টে মামলাও করেছেন বলে দাবি করেন। তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের জেলা সভাপতি নিমাই মহন্ত বলেন, ‘‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাজে অস্বচ্ছতা ঠিক নয়। খোঁজ নেব।’’