কাটোয়ায় তৃণমূলের কর্মী সম্মেলনে স্বপন দেবনাথ। নিজস্ব চিত্র
‘‘দল ক্ষমতায় আছে বলেই মন্ত্রী, বিধায়ক, প্রধান হয়ে ক্ষমতার স্বাদ পাচ্ছি। হেরে গেলে বাড়ির লোকেরাও পাত্তা দেবে না’’— সোমবার কাটোয়ায় কর্মী সম্মেলনে এসে এমনই বার্তা দিলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি স্বপন দেবনাথ। আগামী ছ’মাস ব্লক ও অঞ্চলের কথা না ভেবে বুথ স্তরের নেতা হিসেবে কাজ করার পরামর্শ দেন তিনি। দলের কর্মসূচি হলে, নিমন্ত্রণের অপেক্ষা না করেই লোকজন নিয়ে চলে যেতেও বলেন। মন্তেশ্বরেও কর্মীদের নিয়ে সম্মেলনে আত্মসমালোচনা করে হারের কারণ খুঁজে দলকে জেতানোর জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ার বার্তা দেন তিনি।
এ দিন দুপুরে কাটোয়ার সংহতি মঞ্চে ওই সম্মেলনে ছিলেন বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, জেলা তৃণমূলের চেয়ারপার্সন মমতাজ সঙ্ঘমিতা, জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি রাসবিহারি হালদার প্রমুখ। বিধায়কের অভিযোগ, ‘‘বিজেপি জাতপাতের ভয়ঙ্কর রাজনীতি করে দিকে দিকে অপপ্রচার করছে। তাই সবাইকে আরও বেশি করে সচেতন হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শ বাড়ি-বাড়ি গিয়ে প্রচার করতে হবে। শহর থেকে গ্রাম প্রতিটি বুথের কর্মীদের আরও সক্রিয় হতে হবে।’’ জেলা সভাপতিও জানান, দিনকয়েক আগে জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। রাজ্য থেকে যা তালিকা এসেছে তাতে নতুনদের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। পুরনোদের দায়িত্ব বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু পছন্দের পদ পাওয়া যায়নি বলে রাগ করে ঘরে বসে থাকলে চলবে না। বিরোধীদের অবশ্য দাবি, তাঁদের সঙ্গে লড়াইয়ের থেকেও দলের মধ্যেই লড়াই বেশি তৃণমূলের।
মন্তেশ্বরেও স্বপনবাবুর সঙ্গে সম্মেলনে ছিলেন জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি দেবু টুডু, মন্তেশ্বরের বিধায়ক সৈকত পাঁজা। জেলা সভাপতি জানান, মন্তেশ্বর বিধানসভা কেন্দ্রে ২১৬টি বুথের মধ্যে দল হেরেছে ৬১টি বুথে। লিডও কমেছে। উপনির্বাচনে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী থেকে শিক্ষক, খেতমজুরেরা যে ভাবে এক জোট হয়ে ভোট ময়দানে নেমেছিলেন বিধানসভা ভোটে তা হয়নি বলেও মনে করছেন তিনি। স্বপনবাবুর দাবি, ‘‘স্বেচ্ছায় যাঁরা অন্য দলে চলে যাচ্ছেন তাঁরা যেতে পারেন। তবে অভিমান করে দলের কোনও নেতা বসে থাকলে, তাঁকে ফেরাতে হবে। ভুল-ত্রুটি সংশোধন নিজেদেরই করতে হবে।’’