প্রতীকী ছবি।
এত দিন জেলায় দিনে গড়ে করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫০। শনিবার এক ধাক্কায় দ্বিগুণের বেশি বেড়ে তা হয়েছে ১২১। শুধু ভাতার আর জামালপুর ব্লকেই এক দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ৯০ জন। হাজার পেরিয়েছে জেলায় করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা। সংক্রমণের এই বাড়বাড়ন্ত গোষ্ঠী সংক্রমণের ইঙ্গিত কি না, যে সব গ্রাম পঞ্চায়েতের নাম করোনা-মানচিত্রে উঠে আসেনি, সে সব এলাকাও আদৌ ‘নিরাপদ’ কি না, উঠছে প্রশ্নও।
আজ, মঙ্গলবার এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে খাতায়-কলমে ‘সেফ’ এলাকায় নমুনা সংগ্রহ করতে নামবে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। সেখানে সংক্রমণ ছড়িয়েছে কি না, তা জানার পাশাপাশি, গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়েছে কি না, বোঝা যাবে তা-ও। কিন্তু এমনিতেই নমুনা জমে থাকছে, পরীক্ষা রিপোর্ট পেতে দেরি হচ্ছে। তার মধ্যে ‘গোষ্ঠী সংক্রমণের’ খোঁজে পরীক্ষা শুরু করা মানে, আরও নমুনা জমা হওয়া। পরিস্থিতির মোকাবিলা কী ভাবে হবে? জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) প্রণব রায় বলেন, “মঙ্গলবার থেকে পুরো প্রক্রিয়াটি শুরু হবে। বর্ধমান শহরের সংস্কৃতি লোকমঞ্চ, মেমারি, জামালপুর ও ভাতার হাসপাতালে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট শুরু হবে। এখন আমরা কাজটা শুরু করতে চাইছি। তার পরে লক্ষ্যমাত্রা ধরে এগোব।’’জেলাশাসক বিজয় ভারতীও বলেন, ‘‘যেখানেই স্বাস্থ্য দফতরের তরফে নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে সেখানেই র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের ব্যবস্থা করা হবে।’’
এখনও পর্যন্ত জেলার যত জন করোনা-আক্রান্ত হয়েছেন, তার অর্ধেকের বেশি জন কী ভাবে আক্রান্ত হয়েছেন, তা ‘অজানা’ স্বাস্থ্য দফতরের। শনিবার ভাতারের আক্রান্তদের মধ্যে পরিযায়ী বা তাঁদের সংস্পর্শে থাকা মানুষজনই বেশি, মনে করছে স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যাচ্ছে, ‘হোম আইসোলেশন’-এ থাকা করোনা-আক্রান্তের উপরে নজরদারি বাড়ানোর জন্য ব্লক প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরকে নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। ব্লক অনুযায়ী এখনও ‘নিরাপদ’, গলসি ২, আউশগ্রাম ১ ও ২, রায়না ১। পুরসভা এলাকার মধ্যে দাঁইহাটে মাত্র চার জন আর গুসকরা পুরসভায় এক জন করোনা-আক্রান্ত ধরা পড়েছে। পূর্ব বর্ধমানে ২১৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৭০টি পঞ্চায়েতে করোনা-আক্রান্ত এখনও নেই।
অতিরিক্ত জেলাশাসক (স্বাস্থ্য) রজত নন্দ বলেন, “ওই সব এলাকা নিরাপদ কি না, জানতে স্বাস্থ্য দফতরকে সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর পরিকল্পনা শুরু করেছে। রিপোর্ট পাওয়া গেলে বোঝা যাবে, গোষ্ঠী-সংক্রমণ শুরু হয়েছে কি না।’’ স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, ওই সব গ্রাম পঞ্চায়েতের বাছাই করা ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের সামনে স্বাস্থ্য দফতরের গাড়ি গিয়ে দাঁড়াবে। পথচলতি মানুষের লালারস এবং নাকের গ্রন্থিরসের নমুনা সংগ্রহ করবেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। তবে সেই সব মানুষজনের কাছ থেকেই নমুনা সংগ্রহ করা হবে, যাঁদের সচরাচর অন্যত্র যাতায়াতের
ইতিহাস নেই।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, “আমরা দেখতে চাইছি ,যে সব জায়গাগুলিকে ‘সেফ’ বলছি, সে গুলি কি আদৌ নিরাপদ কি না। ওখানে কেউ সংক্রমিত হলে আর যাতে না ছড়ায় সেটা দেখতে হবে।’’
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)